তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে চিকিৎসক নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক ভালোভাবে দেখছেন না জুনিয়র চিকিৎসকরা। শুক্রবার বিবৃতি দিয়ে জানালেন জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের অন্যতম মুখ আসফাকুল্লা নাইয়া। তিনি জানিয়েছেন, এই বৈঠকের কারণে ‘ক্ষুন্ন’ হয়েছেন তাঁরা। কুণালের সঙ্গে বৈঠক করে এই আন্দোলনের কোনও সুরাহা হবে না।
আসফাকুল্লা নিজের ফেসবুকেও এই বৈঠকের নিন্দা করে পোষ্ট করেছেন। নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের করা পোষ্টটি শেয়ার করে তিনি লেখেন, “গতকালের মিটিং-এর পর থেকে এরকম লাগছে - রাজনৈতিক সত্ত্বা, তারপর ডাক্তার, তারপর মানুষ। আর হ্যাঁ, জুনিয়র ডাক্তারদের জন্য কিছু প্লিজ করবেন না। জুনিয়র ডাক্তাররা সাধারণ মানুষের জন্যই রাস্তায়। আজকে থেকে সাধারণ মানুষের জন্য করুন। সবার জন্য করুন।“
পাশাপাশি, সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়ে আসফাকুল্লা বলেন, ‘‘আমরা ক্ষুণ্ণ। কেন উনি কুণালের সঙ্গে দেখা করলেন, জানি না। আমরা এর প্রতিবাদ করছি না। তবে আমরা দুঃখ পেয়েছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে দেখা করে কথা বললে আমাদের সমস্যার সমাধান হলেও হতে পারে। কিন্তু কুণাল ঘোষের সঙ্গে কথা বলে এর কোনও সমাধান হবে বলে আমাদের মনে হয় না।’’
আন্দোলন প্রসঙ্গে আসফাকুল্লা আরও বলেন, ‘‘আমরা জানি, সব যুদ্ধে জেতা যায় না। কিন্তু রণাঙ্গনে সক্রিয় থাকতে হয়। তার ফলেই ইতিমধ্যে অনেক কাজও হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংস্কার এই আন্দোলনের ফলেই হয়েছে।’’
১০ দফা দাবি নিয়ে লাগাতার অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আজ সেই অনশন পনেরো দিনে পড়েছে। এই আবহে বৃহস্পতিবার কুণাল ঘোষের সাথে বৈঠক করলেন চিকিৎসক নারায়ণ বন্দোপাধ্যায়। এই নারায়ণ বন্দোপাধ্যায়কে বিভিন্ন সময়ে বামেদের জনসভায় অথবা মিছিলে দেখা গেছে। কুণাল ঘোষের সাথে তাঁর বৈঠকের খবর পেতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোল হচ্ছেন তিনি।
বিতর্ক শুরু হওয়ার পর রাতের দিকে এক ফেসবুক পোষ্টে চিকিৎসক নারায়ণ বন্দোপাধ্যায় জানান “জুনিয়রদের ভালোর জন্য যা করার করেছি। আমি প্রথমে মানুষ, তারপর ডাক্তার, তারপর আমার রাজনৈতিক সত্ত্বা।”
যদিও এরপরেও থামেনি বিতর্ক। এরপর রাতের দিকে ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের শাসকের অবস্থানটা পরিষ্কার জানার জন্য তাঁর (কুণাল ঘোষ) কাছে গিয়েছিলাম। আসলে দু'পক্ষই অনড়। বিশেষ করে সরকার বেশি অনড়। জুনিয়র ডাক্তারদের অনেকেই বোড়ে হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন