শহরজুড়ে ফুটপাতের হকার উচ্ছেদ নিয়ে জনস্বার্থে মামলা দায়েরের অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। তবে, পুলিশের অতিসক্রিয়তা নিয়ে মামলা শুনতে রাজি হলেন না বিচারপতি।
সোমবার নবান্ন সভাঘরে হকার উচ্ছেদ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশের পর শহরজুড়ে 'অতিসক্রিয়' পুলিশ প্রশাসন। শহরের বিভিন্ন ফুটপাত খালি করতে ভাঙা হচ্ছে অস্থায়ী দোকান। দোকান ভাঙতে চালানো হচ্ছে বুলডোজার। আর পুলিশের এই অতিসক্রিয়তা নিয়ে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী শামিম আহমেদ।
আদালতে তাঁর আবেদন, হকারদের উচ্ছেদ আইন মেনে করা হচ্ছে না। গত দু’দিন ধরে হকারদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে পুলিশ। মারধর করা হচ্ছে তাদের। দোকানের উপর চালানো হচ্ছে বুলডোজার। দেখা হচ্ছে না বৈধ- অবৈধতা। লঙ্ঘন হচ্ছে নাগরিক অধিকার। এই বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
এবিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দেন, এটি কোনো নির্দিষ্ট একটি ঘটনা নয়। এর সাথে অনেকের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। জনস্বার্থে মামলা দায়ের করা উচিত। পাশাপাশি তিনি জানান, এই বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চাইলে বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে আবেদন করুন।
প্রসঙ্গত, সোমবারই নবান্নে পুরসভার চেয়ারম্যান, মেয়রদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বৈঠকেই বিধাননগর, কলকাতা সহ একাধিক পুরসভার অধীনে থাকা ফুটপাত দখল নিয়ে সরব হন তিনি। ওই প্রশাসনিক বৈঠকেই দলের নেতা মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে ফুটপাতে হকার বসানোর অভিযোগ তোলেন তিনি। সোমবার তিনি বলেন, এমন অনেক পুলিশ রয়েছে যারা ঠিক করে কাজ করছে না।
এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকেই কলকাতা, বিধাননগর সহ একাধিক জায়গায় হকার উচ্ছেদ অভিযানে নামে প্রশাসন। কোথাও বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় বহু বছর ধরে ফুটপাতে ব্যবসা করে আসা হকারদের দোকান। আচমকা এই অভিযানে রুটি রুজি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ছোটো ব্যবসায়ীরা।
সল্টলেক সেক্টর ৩ এবং সেক্টর ৫-এও উচ্ছেদ অভিযান চলে। বিধাননগর পুরসভা থেকে সেক্টর ৩-এর ফুটপাতে থাকা দোকানগুলি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফুটপাতে বহু বছর ধরেই তাঁরা ব্যবসা করতেন বলেই জানিয়েছেন হকাররা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন