সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে একটি মামলার তদন্তের স্বার্থে বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামীকে তলব করেছিল সিআইডি। পরপর দুদিন ভবানী ভবনে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলেছে। এবার সেই জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে সিআইডির বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন বিচারপতির স্বামী প্রতাপচন্দ্র দে। ঘটনাচক্রে, তিনি নিজেও একজন আইনজীবী। বিচারপতির স্বামীর অভিযোগ, অন্য মামলার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে, স্ত্রীর বিরুদ্ধে বয়ান লেখার জন্য চাপ দিচ্ছে সিআইডি।
উল্লেখ্য, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে চলছে রাজ্যের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলা। ইতিমধ্যেই রাজ্যের তীব্র সমালোচনা করে কড়া কড়া মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে পাঠিয়েছেন। এছাড়াও পঞ্চায়েত, পুরসভা নির্বাচনের সময় হওয়া একাধিক মামলা চলছে তাঁর এজলাসে। আর এর মধ্যেই তাঁর স্বামীর নাম জড়ালো অন্য একটি মামলায়।
বাংলার একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচারপতি সিনহার স্বামী প্রতাপচন্দ্রের অভিযোগ, পরপর দুদিন তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। দ্বিতীয় দিন প্রায় ন’ঘণ্টা চলেছে তাঁর জিজ্ঞাসাবাদের পর্ব। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
তাঁর দাবি, প্রশ্ন করার বদলে বিচারপতি সিনহার বিষয়ে নানাবিধ তথ্য জানার চেষ্টা করেছেন সিআইডি অফিসারেরা। তিনি যাতে তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা সাজানো বয়ান দেন, তার জন্যও তাঁকে কুকথা বলার পাশাপাশি মানসিক নিপীড়নও চালানো হয়েছে বলে দাবি।
এখানেই শেষ নয়, বয়ান দেওয়ার জন্য সিআইডির তরফ থেকে টাকা, বাড়ি, গাড়ির টোপও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এনিয়ে তিনি ইতিমধ্যেই কলকাতা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনকে একটি চিঠিও লিখেছেন। চিঠি পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি মুর্মু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল বোসকে। সমস্ত ঘটনার বিবরণ দেওয়া হয়েছে সেই চিঠিতে।
অন্যদিকে, প্রতাপচন্দ্র দের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে সিআইডি আধিকারিকরা। সূত্রের খবর, আধিকারিকদের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই তদন্ত হচ্ছে। প্রশ্নাবলি তৈরি করে যে পদ্ধতি মেনে তদন্ত করা উচিত, তেমনটাই করা হচ্ছে। বরং তদন্তকারী আধিকারিকরা বিচারপতির স্বামীর বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগ এনেছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন