রেশন বন্টন দুর্নীতি ঠিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির মতোই। যত তদন্ত এগোচ্ছে তত পেঁয়াজের খোসা ছাড়ানোর মতো নতুন নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে। জ্যোতিপ্রিয়র পাশাপাশি একাধিক তৃণমূলের নেতার নামও জানতে পেরেছে ইডি। সূত্র মারফত এটাই জানা যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে। বর্তমানে তিনি এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তবেই তাঁকে হেফাজতে নিতে পারবে ইডি। তবে তদন্ত থেমে নেই। ইডি সূত্রে খবর, এই দুর্নীতিতে রাজ্যের একাধিক আমলা, বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা যুক্ত রয়েছেন। জ্যোতিপ্রিয়র এক ঘনিষ্ঠের নামও উঠে এসেছে। যিনি আবার মুখ্যমন্ত্রীর সাথে দুবার লন্ডন গেছেন রাজ্যে বিনিয়োগ আনার জন্য।
পাশাপাশি রেশন দুর্নীতিতে ধৃত ব্যবসায়ী বাকিবুরের কাছ থেকেও একাধিক তথ্য জানতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার আধিকারিকরা। জেরায় বাকিবুর জানিয়েছেন তিনি মন্ত্রীকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ঋণ দিয়েছিলেন। কিন্তু মন্ত্রী কোনো দিন সেই টাকা ফেরত দেননি। বাকিবুর রহমানের দুই কর্মীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। ওই দুই কর্মীর মোবাইল ফোনও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মোবাইলে ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারির তথ্য মিলেছে। যেখানে লেখা ছিল এমআইসিকে ৬৮ লক্ষ টাকা পেমেন্ট হয়ে গেছে। বাকিবুরের কর্মীরাই জানান এমআইসি মানে মিনিস্টার ইন চার্জ। অন্য একজনের ফোনেও একই লেখা ছিল। তবে টাকার পরিমাণ ছিল ১২ লক্ষ।
ইডির তদন্তে তিনটি কোম্পানির কথাও জানা যায়। তদন্তকারী সংস্থার প্রাথমিক অনুমান এই কোম্পানিগুলির মাধ্যমেই কালো টাকা সাদা করা হয়েছে। সেই টাকাই ঋণ হিসেবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে দেওয়া হয়েছিল। ৮০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনটি কোম্পানির মাধ্যমে খোলা বাজারে বেশি দামে রেশন সামগ্রী বিক্রি করা হতো। ওই তিন কোম্পানি হল - গ্রেসিয়াস ইনোভভেটিভ প্রাইভেট লিমিটেড, শ্রী হনুমান রিয়েলকন প্রাইভেট লিমিটেড এবং গ্রেসিয়াস ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড। এই ৩ কোম্পানিই চালাতেন বাকিবুর রহমান এবং ডিরেক্টর ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্ত্রী এবং মেয়ে। এই কোম্পানিগুলির টাকা থেকেই জ্যোতিপ্রিয়র বিপুল সম্পত্তি হয়েছিল বলেই ইডির দাবি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন