দক্ষিণ কলকাতার তিলজলায় নাবালিকা হত্যাকাণ্ডে রাজ্য সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছে দ্য ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেক্টিং অফ চাইল্ড রাইটস (NCPCR)। নোটিশে রাজ্য সরকারের কাছে 'নরবলি'র বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন কমিশনের আধিকারিকরা।
নাবালিকা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার। সরকারি সূত্রে খবর, এনসিপিসিআর বা জাতীয় শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশন রাজ্যের মুখ্য সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেলের কাছে নোটিশ পাঠিয়েছে। কমিশনের আধিকারিকদের রাজ্য সফরের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না নবান্নের আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, রবিবার সন্ধ্যায় তিলজলার একটি বহুতলের ফ্ল্যাট থেকে সাত বছরের শিশুকন্যাটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। শিশুকন্যাটিও তার বাবা-মার সাথে ওই বহুতলেরই অন্য একটি ফ্ল্যাটে থাকত। তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্ত অলোক কুমার এক তান্ত্রিকের পরামর্শে সন্তান লাভের আশায় ওই নাবালিকাকে খুন করে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দোষীর উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় স্থানীয়রা। এই পরিস্থিতিতে কলকাতা পুলিশ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠিও লেখেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, কলকাতা পুলিশ যদি সঠিক সময়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতো তাহলে নাবালিকাকে বাঁচানো যেত। পুলিশ প্রথমে শিশুটির মা-বাবার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। ঘন্টার পর ঘন্টা তাঁদের কোনো কথা শোনেনি। আর যখন মৃতদেহটি উদ্ধার করা হলো তখন পুরো বিষয়টি ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
সোমবার, নাবালিকা খুনের প্রতিবাদে পুলিশ ও বিক্ষুব্ধ জনতার মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ বাধে। বহু সময় ধরে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় রেল অবরোধ করা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়েন উত্তেজিত জনতা। পুলিশের দুটি গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন লাগানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় র্যাফও।
সোমবারের ঘটনার পর প্রায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সকলের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট, পুলিশকে মারধর, রাস্তা অবরোধ সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজও খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন