মাত্র ৬ দিনের মাথাতেই বেহালা পর্ণশ্রীর জোড়া খুনের কিনারা করে ফেললো কলকাতা পুলিশ। গত ৬ সেপ্টেম্বর বেহালার এই অভিজাত অঞ্চলে খুন হয়েছিলেন ৪৫ বছর বয়সী সুস্মিতা মণ্ডল এবং তাঁর ১৩ বছর বয়সী ছেলে তমোজিত মন্ডল। এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে রবিবার কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে নিহত মহিলার দুই সম্পর্কিত ভাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ মুরলীধর শর্মা এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, সঞ্জয় দাস এবং তাঁর ভাই সন্দীপ দাসকে সুস্মিতা মণ্ডল এবং তাঁর ছেলেকে খুনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক প্রমাণ এবং তথ্যর ভিত্তিতে জানা গেছে এই দু’জন টাকার জন্য সুস্মিতা মন্ডলকে হত্যা করেছে।
তিনি আরও জানান, আততায়ীরা ভেবেছিলো সুস্মিতা মণ্ডলের কাছে অনেক নগদ টাকা আছে। কারণ সুস্মিতা মণ্ডলের সোনার গয়না কেনার অভ্যাস ছিলো। আততায়ীদের আরও ধারণা ছিলো যে বাড়িতেই হয়তো প্রচুর গয়না রাখা আছে। এই কারণেই তাঁরা সুস্মিতা মণ্ডলকে খুন করে। ঘটনার সময় নিহত সুস্মিতার ছেলে অনলাইন ক্লাস করছিলো। সে এই ঘটনা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করে আততায়ীরা। যদিও আততায়ীরা খুব বেশি গয়না পায়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্র অনুসারে, সঞ্জয় দাস এক শপিং মলে সিসিটিভি মেকানিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি তাঁর বড়ো ছেলের বিয়ের সময় প্রচুর টাকা দেনা করেছিলেন। টাকার তাগাদায় প্রায়শই তাঁর বাড়িতে দেনাদাররা আসতো। এর আগেও তিনি তাঁর বোনের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন এবং সেই টাকা শোধ দেননি।
ঘটনার দিন সঞ্জয় এবং সন্দীপ বোনের বাড়িতে আসে এবং টাকা চায়। বোন সুস্মিতা মণ্ডল টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এরপর তিনি যখন দাদাদের জন্য চা করতে যান তখনই সঞ্জয় তাঁর গলা কেটে খুন করেন এবং মৃত্যু নিশ্চিত করতে একাধিকবার শরীরে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এই সময় নিহত সুস্মিতার ছেলে অনলাইন ক্লাস ছেড়ে বেরিয়ে আসে এবং পুরো ঘটনাটি দেখে ফেলে। এরপরেই দুই ভাই মিলে তমোজিতকে খুন করে।
পুলিশের অনুমান, আচমকা নয়, বরং দীর্ঘদিন ধরেই সঞ্জয় এই খুনের পরিকল্পনা করেছিলো। যে কারণে এই অঞ্চলে বেশ কয়েকবার এসে সে সমস্ত সিসিটিভি-র অবস্থান দেখে যায়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, এই দুই ব্যক্তি ছাড়া আরও কেউ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত কিনা তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
৬ সেপ্টেম্বর ঘটনার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহতের স্বামী তপন মণ্ডলকে আটক করে পুলিশ। যদিও পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে পরিচিত কেউই এই খুন করেছে। কারণ নিহত সুস্মিতা মণ্ডল পরিচিত ছাড়া কাউকেই দরজা খুলতেন না।
- With inputs from IANS
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন