ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’র প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই বৃষ্টিতে জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২৫ বছরের এক যুবকের। এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অন্যদিকে জানা যাচ্ছে, বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা সিইএসসির পক্ষ থেকে আলাদা একটি অভিযোগ দায়ের হতে পারে এই ঘটনায়।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার বিকালে ভবানীপুরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে। শুক্রবার সকাল থেকে লাগাতার বৃষ্টির ফলে জল জমে যায় ওই এলাকায়। ওই দিন বিকেলে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন ওই যুবক। স্থানীয় সূত্রে খবর, ভবানীপুরের জাস্টিস দ্বারকানাথ রোডে জল পেরিয়ে একটি বাড়ির রেলিং ধরে হাঁটছিলেন যুবক। সেই সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জলে পড়ে যান যুবক। স্থানীয়েরা তাঁকে দেখতে পেয়ে বাঁশ দিয়ে বিদ্যুৎবাহী তারের কাছ থেকে তাঁকে সরান। তার পর তাঁকে উদ্ধার করে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম সৌরভপ্রসাদ গুপ্ত (২৫)। তিনি বিহারের বাসিন্দা হলেও থাকতেন কলকাতাতে। ভবানীপুরে তাঁদের একটি ভুজিয়ার দোকান রয়েছে। বাবার সঙ্গে যুবকও সেই দোকান চালাতেন। শুক্রবার বিকেলে জল পেরিয়ে দোকানেই যাচ্ছিলেন তিনি। এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে তদন্ত শুরু করেছে ভবানিপুর থানার পুলিশ।
এই ঘটনায় মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সী বলেন, ‘‘দুর্যোগের জন্য আমরা এলাকার বিদ্যুতের খুঁটিগুলি এ বার ভাল করে পরীক্ষা করেছিলাম। যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে পুরসভার কোনও বিদ্যুতের খুঁটি নেই। একটি বাড়ির মিটার বক্স থেকে অবৈধ ভাবে সংযোগ টেনে আলো জ্বালানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। সেখান থেকেই যুবকটি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছে। পুলিশ এবং সিইএসসি বিষয়টি দেখছে।’’
অন্যদিকে, জানা যাচ্ছে, বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে পারে সিইএসসি। যে বিদ্যুতের তার ঝুলছিল, তার মাধ্যমে অবৈধ ভাবে বিদ্যুতের সংযোগ টানা হয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কেন্দ্রে একটি মর্মান্তিক ঘটনা, যা এড়ানো যেত। জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক যুবক প্রাণ হারালেন। নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা সত্ত্বেও তাঁর প্রশাসন ব্যর্থ হল। মেয়র ফিরহাদ হাকিম তথা তৃণমূলের দুর্নীতি আর কত দিন সহ্য করতে হবে মানুষকে? অপশাসনের খেসারত এ ভাবেই দিতে হচ্ছে।’’’
সুকান্তের বক্তব্যের পাল্টা তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদার একটি দুর্ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করতে নেমেছেন। যাদের শাসনে বিভিন্ন রাজ্যগুলিতে স্টেশন, এয়ারপোর্ট ডুবে রয়েছে, তারা এখানকার ঘটনা সম্পর্কে না জেনে রাজনীতি করতে নেমেছে।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন