শ্লীলতাহানির অভিযোগে রাজভবনের ফুটেজ হাতে পেয়েই পদক্ষেপ শুরু করল লালবাজার। জানা গেছে, রাজভবনের তিন কর্মচারিকে তলব করেছে কলকাতা পুলিশ। তাঁদের মধ্যে একজন সচিবও রয়েছেন বলে খবর।
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনেছিলেন রাজভবনের এক অস্থায়ী কর্মী। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে রাজভবনের তরফ থেকে প্রকাশ করা হয় এক ঘন্টা ১৯ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ। সেই ফুজেট হাতে পেয়েই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করল লালবাজার।
কলকাতা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফুটেজ হাতে পেতেই তার স্ক্রিনশট তুলে রাজভবনে পাঠানো হয়। জানতে চাওয়া হয়, ফুটেজে দেখা যাওয়া ব্যক্তিদের পরিচয়। পরিচয় পাওয়ার পর শুক্রবার ওই তিন ব্যক্তিকে তলব করে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে এক সচিব ও এক চিকিৎসক রয়েছেন। রয়েছেন আরও এক ব্যক্তি। যদিও লালবাজার সূত্রে খবর, তাঁরা কেউ তলবে সাড়া দেননি।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযোগকারিণী জানিয়েছিলেন, গত ২৪ মার্চ রাজভবনের কনফারেন্স রুমে হেনস্থার শিকার হয়েছিলেন তিনি। ওই ঘটনার পর তিনি নীচের তলায় সচিবের ঘরে যান। সেখানেই ছিলেন ওই চিকিৎসক। জানা গেছে, সিসিটিভি ফুটেজেও সচিবের ঘরে যেতে দেখা গিয়েছে অভিযোগকারিণী ওই মহিলাকে।
সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার রাতেই ওই ফুটেজ হাতে পায় কলকাতা পুলিশ। তারপর থেকেই তদন্ত শুরু করে পুলিশ। রাজ্যপাল সংবিধানের রক্ষাকবচ পান। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি তদন্ত সম্ভব নয়। লালবাজার জানিয়েছে, কোনও ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে তদন্ত নয়, নির্দিষ্ট একটি অভিযোগের অনুসন্ধান করছে তারা। তার অঙ্গ হিসাবেই সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। জানা গেছে, অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে ফুটেজের কিছু অংশেও মিল পাওয়া গেছে। এর আগে পুলিশ রাজভবনে ফুটেজ চেয়েছিল। কিন্তু সেসময় পুলিশকে সেই ফুটেজ দেওয়া হয় নি।
এরপর বৃহস্পতিবার আগাম ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিকভাবে সেই ফুটেজ প্রকাশ্যে আনে রাজভবন। রাজ্যপালের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পুলিশ ছাড়া রাজ্যের যে কোনও নাগরিক চাইলেই ফুটেজ দেখতে পাবেন। সেই মতো বৃহস্পতিবার অনেকেই ফুটেজ দেখতে গিয়েছিলেন।
সেই ফুটেজে অভিযোগকারিণীকে দু’বার দেখা গিয়েছে। এক বার তিনি রাজভবনের দিক থেকে হন্তদন্ত হয়ে পুলিশ আউটপোস্টের দিকে যাচ্ছেন। এবং কিছু ক্ষণ পর সেখান থেকে বেরিয়ে পাশের ঘরে যাচ্ছেন। নর্থ গেটের সামনের দু’টি ক্যামেরা থেকে এই দৃশ্য দেখানো হয়।
যদিও অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, তাঁকে কনফারেন্স রুমে শ্লীলতাহানি করা হয়েছিল। সেখানকার ফুটেজ প্রকাশ করা হয়নি। পাশাপাশি, রাজভবনের ভিতরের কোনো ফুটেজও প্রকাশ করা হয়নি।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন