শুভেন্দুর প্রশংসায় মজলেন তৃণমূলের অপসারিত রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। পাশাপাশি সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে 'হীরক রাজার দেশে' ছবিও দেখলেন তিনি, যেখানে দড়ি ধরে টান মেরে অত্যাচারী রাজাকে গতিচ্যুত করার বার্তা দেওয়া হয়েছে। অপসারিত হওয়ার একদিন পরেই এই দুটি ঘটনায় অন্য ইঙ্গিত পাচ্ছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
বুধবার উত্তর কলকাতার বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের প্রশংসা করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দলের রাজ্য সম্পাদক পদ থেকে অপসারিত করা হয় কুণাল ঘোষকে। অপসারণের পরই দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কুণাল। তাঁর অভিযোগ, দলের হয়ে সব থেকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন তিনি। অথচ তাঁকেই বারবার অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয় কেন?
বৃহস্পতিবার ফের একবার তৃণমূলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের সদ্য প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। আর তখনই শুভেন্দুর প্রশংসা শোনা যায় কুণালের গলায়। এক সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় কুণাল বলেন, "শুভেন্দু অধিকারীর বিরোধী আমি। শুভেন্দু আমার দলের নেত্রী বা নেতাকে যে ভাষায় আক্রমণ করে, আমিও তার উত্তর দিই। কিন্তু বিরোধী দলনেতা হিসেবে শুভেন্দু যে ভাবে গোটা রাজ্য ঘুরে পারফর্ম করে চলেছে, তাঁর এই মরিয়া পারফর্ম্যান্সটাকে অস্বীকার করা যায় না।"
দলের নেতা তথা উত্তর কলকাতার তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে সরাসরি শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর তুলনা টানেন। কুণাল বলেন, "শুভেন্দু অধিকারী যদি গোটা বাংলা ঘুরে তাঁর দলের হয়ে পারফর্ম করেন, আমাদের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন অন্য লোকসভা কেন্দ্রে যাচ্ছেন না? উনি তো আমাদের সাংসদদের নেতা, নিজের সহকর্মীদের কেন্দ্রে একবারও যেতে ইচ্ছে করে না ওঁর? পাঁচ বছর এমনিতে কর্মীরাই খুঁজে পান না ওঁকে, সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা। এখন স্বার্থপরের মতো, ভোটে জেতার জন্য নিজের কেন্দ্রে পড়ে রয়েছে।"
পাশাপাশি, ২ মে সত্যজিৎ রায়ের জন্মদিনে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে কুণাল লেখেন, ‘‘আজ আরেকবার ‘হীরক রাজার দেশে’ দেখব।’’ তার পর সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ওই ছবির একটি গান গাইতেও দেখা গেল কুণালকে। কুণাল গাইলেন ‘‘কতই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়... আমি যেই দিকেতে চাই, দেখে অবাক বনে যাই, আমি অর্থ কোনও খুঁজে নাহি পাই রে।’’
এরপরেই ওই গান ও সিনেমার সঙ্গে মেলালেন বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে। কুণালের কথায়, ‘‘যারা মন যুগিয়ে চলবে, যাদের নিজস্বতা থাকবে না, তারাই শৃঙ্খলাপরায়ণ। তবে একে শৃঙ্খলা বলব না কি শৃঙ্খল, তা বুঝতে পারছি না। রাজনৈতিক কর্মীর উপর দমন-পীড়ন হতে হতে ধীরে ধীরে শৃঙ্খলাটা শৃঙ্খল হয়ে যায়। আমার মনে হয় ওঁরা চান, কয়েকটা যন্ত্র থাকবে, যাঁরা শুধু শৃঙ্খলাপরায়ণ নয়, শৃঙ্খল পরায়ণ।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন