অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করায় কুণাল ঘোষকে একযোগে আক্রমণ করেছে বাম-কংগ্রেস ও বিজেপি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর কথায় কুণাল 'রাজনৈতিক ছোটোলোক'।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টচার্য। তাঁর শারীরিক অবস্থায় খোঁজ নিতে রাজ্যপাল থেকে শুরু করে বিরোধী দলের নেতারাও ছুটে গেছেন হাসপাতালে। আর এই প্রসঙ্গে বুদ্ধবাবুকে নিয়ে 'অপ্রীতিকর' মন্তব্য করেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সিপিআইএম, কংগ্রেস ও বিজেপি। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, 'রাজনৈতিক ছোটোলোক বলে অভিধানে নতুন কোনো ভাষা লিখতে হবে। এখনই এই ধরণের মুখপাত্রকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া দরকার'।
সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, 'কিছু অসভ্যদের নিয়েই যে তৃণমূল, এটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অসভ্যদের দল, অসভ্যরাই তার মাথায়। সেই কারণে এইরকম অসভ্যের মতো কথাবার্তা বলার জন্য কিছু পিপীলিকা নিজেদেরকে পাখি ভাবতে পারে। কিন্তু ওরা পিপীলিকাই'।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও কুণালের মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন। তিনি বলেন, 'কুণাল ঘোষের শিক্ষা, রুচি নিয়ে কিছু বলতে চাই না। তাহলে ব্যক্তিগত আক্রমণ হয়ে যাবে। বুদ্ধবাবুর সাথে আমাদের আদর্শগত মতপার্থক্য আছে। ১৮০ ডিগ্রি বিরোধিতা করি। কিন্তু তিনি রাজ্যের প্রশাসক ছিলেন। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন। সবথেকে বড়ো কথা হলো ওনার দিকে কেউ আঙুল তুলে চোর বলতে পারবে না। আমরাও তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করে হাসপাতালে এসেছি। এটাকে যদি কারুর আদিখ্যেতা মনে হয় সেটা তার রুচির ব্যাপার।'
প্রসঙ্গত কুণাল ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, "ওনার দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। কিন্তু যারা আদিখ্যেতা করে তাঁকে মহাপুরুষ সাজাচ্ছেন তার সঙ্গে একমত নই। কারণ, বুদ্ধদেব বাবুর জমানায় সিপিএম বহু খারাপ কাজ করেছে। এবং বুদ্ধদেববাবুর ঔদ্ধত্য এবং ভুল সিদ্ধান্তে বহু ক্ষতি হয়েছে। এই মুহুর্তে আমার মনে হয় দেখতে গিয়ে খুব কার্যকরী কোনো কাজ সেখানে হবে না। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত খোঁজখবর রাখছেন। দায়িত্বশীল অভিভাবিকার মতো খোঁজখবর রাখছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের"।
তৃণমূল মুখপাত্র যখন বুদ্ধবাবুকে নিয়ে এই ধরণের মন্তব্য করছেন তখনই ভিন্ন সুর শোনা গেল তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের গলায়। তিনি বলেন, 'বুদ্ধবাবুকে আমি শ্রদ্ধা করি। ওনার শিক্ষাকে আমি সম্মান করি। বুদ্ধদেব ভট্টচার্যের মতো মানুষ আজকের রাজনীতিতে বিরল। আজীবন একজন বামপন্থী মানুষ। তাঁর শিরদাঁড়া এখনও সোজাই আছে'।
তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করেছেন। তিনি বলেন, 'মানুষ হিসেবে ওনাকে শ্রদ্ধা করি। আমি চাই উনি দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাক। রাজনীতির মধ্যে যদি ভালো মানুষ থাকে তার মধ্যে উনি (পড়ুন বুদ্ধবাবু) একজন'।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন