আর জি করে ভাঙচুরের ঘটনায় এবার সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে তলব করল কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, মীনাক্ষী ছাড়াও এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই –এর আরও ছ’জনকে তলব করেছে পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ, হামলার সময় হাসপাতালের বাইরে ডিওয়াইএফআইয়ের কিছু পতাকা দেখা যায়।
মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে গত ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে আর জি করের সামনে জমায়েতের ডাক দিয়েছিল ডিওয়াইএফআই, এসএফআই। বহু মানুষ সেই ডাকে সাড়া দিয়ে জড়ো হয়েছিলেন। সেই ভিড়ের সুযোগ নিয়ে কিছু দুষ্কৃতী তাণ্ডব চালায় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। তছনছ করা হয় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট কাউন্টার, এইচসিসিইউ, সিসিইউ, ওষুধের স্টোররুমও। হামলা চালানো হয় হাসপাতালের বাইরেরও। ভাঙচুর করা হয় আরজি করের পুলিশ ফাঁড়ি, এমনকি আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের মঞ্চও ভাঙা হয়। অভিযোগ ওঠে, পুলিশ সেই সময় নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছিল। অনেক পরে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ৩০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় পোষ্টও করে পুলিশ। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে হামলার একাধিক ভিডিও দেখায় কলকাতা পুলিশ। যেখানে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, কিছু দুষ্কৃতী পুলিসকে টপকে ভিতরে ঢুকতে চেষ্টা চালাচ্ছে। আর পিছনে ডিওয়াইএফআইয়ের পতাকা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন কয়েক জন। এরপরেই মীনাক্ষী-সহ সাতজনকে তলব করেছে পুলিশ।
লালবাজার সূত্রে খবর, হামলাকারীদের মীনাক্ষীরা চেনেন কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হবে। যদি না চিনে থাকেন, তাহলে তাঁদের অপরাধে কেন উস্কানি দিচ্ছিল, তাও জানতে চাওয়া হতে পারে বলে খবর। তবে এই তলব নিয়ে মীনাক্ষীর কোনো প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। এনিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, “এখনও নোটিস পাইনি। নিশ্চয়ই নোটিস পাঠাবে। যাঁরা যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁদের সবাইকেই হয়তো ডাকবে।”
আর জি করে হামলার নেপথ্যে বিজেপি এবং সিপিআইএম-এর হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, "অমানবিক ঘটনা নিয়ে দানবিকতা করছেন, তাণ্ডব করছেন। সিপিএম-বিজেপি ভাঙচুর করেছে। রাত ১২টার পর DYFI-এর পতাকা নিয়ে যাওয়া হয় এবং বিজেপি জাতীয় পতাকার অপব্যবহার করে।"
এর উত্তরে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের পতাকা শুধু আমাদের অফিসে পাওয়া যায় না। বড়বাজারেও কিনতে পাওয়া যায়। যখন আমরা সংগঠনের পতাকা কাঁধে তুলে নিই, তখন তা নিয়ে দায়বদ্ধ থাকি।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন