সম্পত্তি বৃদ্ধির মামলা প্রসঙ্গে এবার বিরোধীদের পাল্টা নিশানা করল তৃণমূল। বুধবার, সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম, ব্রাত্য বসুরা জানান যে একতরফাভাবে বদনামের চেষ্টা করা হচ্ছে। যদিও এই সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। সাংবাদিক সম্মেলনে কী দেখিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী? অর্ডার অথবা পিটিশন? যে বিষয়ে ছয় তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ব্রাত্য বসুকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়।
এদিন ব্রাত্য বসুদের সাংবাদিক সম্মেলনের পরেই ওই মন্তব্যকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিশিষ্ট আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় লেখেন, "কথা হচ্ছে অর্ডার নিয়ে। ব্রাত্য দেখালেন পিটিশন। হ্যাঁ, বিপ্লব চৌধুরি মামলা করার পর অভিজিৎ গাঙ্গুলি বলে একজন আইনজীবী একটি মামলা করেন। কয়েকজন বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলাটি একই সাথে শুনানী হয়, বিপ্লব চৌধুরির মামলার সঙ্গে। ফলে অর্ডার একসাথেই আসে।"
ইডির অন্তভুর্ক্তি প্রসঙ্গে সব্যসাচীর কথায়, ২০১৭ সালের পরে এই মামলাটি আদালতে শুনানীর জন্য উল্লেখ করেন আইনজীবী শামিম আহমেদ। সাম্প্রতিক সুপ্রীম কোর্টের আয়ের নজির উল্লেখ করে ইডির অন্তর্ভুক্তির প্রার্থনা করি আমি এবং সেই প্রার্থনা মঞ্জুর হয়। অরিজিত বাবুর আইনজীবীরা কোনো প্রার্থনা করেননি। তাই ইডি অন্তর্ভুক্তি ওই মামলায় করার প্রশ্নই আসেনি।
এরপরেই ব্রাত্য বসুকে চ্যালেঞ্জ করে সব্যসাচী জানিয়েছেন, "ব্রাত্যবাবু সঠিক বলেছেন বিরোধীদের নামেও মামলা হয়েছে। ব্রাত্য বাবু যেটা ভুল বলেছেন সেটা হল অর্ডার। আর যদি ধরে নিই উনি ঠিক বলেছেন তাহলে ওনার জন্য একটা ছোট্ট কাজ দিলাম। অরিজিত বাবুর মামলায় যাতে ইডিকে পার্টি করা হয় সেটা যেন উনি নিশ্চিত করেন ১২ ই সেপ্টেম্বরের মধ্যে, নইলে আদালত অবমাননার দায়ে ওনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানান, যে মামলার উল্লেখ ব্রাত্য বসু করেছেন সেই মামলা করেছিলেন অভিজিৎ গাঙ্গুলী নামে এক আইনজীবী। সেই মামলায় ইডি অন্তর্ভুক্তির কোনো দাবি জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, বুধবার সাংবাদিকদের সামনে ব্রাত্য বসু দাবি করেন, "কোনো মামলার একটা অংশ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তোলা হবে আর একটা অংশ তোলা হবেনা সেটা ঠিক নয়। মহামান্য আদালত আজ এই মামলার রায় আজ আপলোড করেছে। সেই রায় সামনে আসার পর এই সাংবাদিক সম্মেলন।" তাঁর দাবি অনুসারে এই তালিকায় নাম আছে সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেসের একাধিক নেতার। যাদের মধ্যে রয়েছেন সিপিআই(এম) নেতা সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গাঙ্গুলী, কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী, আবু হেনা, নেপাল মাহাতো, মোহিত সেনগুপ্ত প্রমুখ।" তিনি আরও জানান, "তাঁর কথায়, “আমরা সিপিএম, কংগ্রেস বা অন্য দল নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। কুৎসার বিকল্প কুৎসা হতে পারে না। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ নেব।"
একতরফাভাবে তৃণমূলকে আক্রমণ করা হচ্ছে দাবি তুলে ফিরহাদ বলেন, "নির্বাচনী হলফনামায় আয়-ব্যয়ের সব হিসাব দিয়েছি। আয়কর দপ্তর কোনও পদক্ষেপ করেনি। রোজগার করা, সম্পত্তি বাড়ানো অন্যায় নয়। এটা জনস্বার্থ মামলা নয়। রাজনৈতিক স্বার্থে করা মামলা। বিজেপির বি টিম হয়ে কংগ্রেস-সিপিএম আক্রমণ করছে। অর্ধেক তথ্য প্রকাশ করছেন কেন?" পাশাপাশি পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "পার্থ যা করেছেন, তাতে আমরা লজ্জিত। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, তৃণমূলের সবাই চোর।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন