আজ ২৩ জানুয়ারী, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৮ তম জন্মবার্ষিকী। আর এই দিনে রাজ্যের সর্বত্র ‘দেশপ্রেম দিবস’ হিসাবে পালন করল বামফ্রন্ট। মঙ্গলবার সকালে ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। এরপর সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে নেতাজী মূর্তিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়। পাশাপাশি, নেতাজীর জন্মদিবসকে ‘দেশপ্রেম দিবস’ ঘোষণার দাবি তোলে বামফ্রন্ট।
এদিন সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে সাংবাদিকদের সামনে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানান, ‘নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর দেশপ্রেম দিবস হিসাবে পালন করা নিয়ে মনমোহন সিংকে চিঠি দিয়েছি, মোদীকেও চিঠি দিয়েছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। রাজ্য সরকারকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তারা পালন করতে চায় না।‘
এরপর তিনি আরও জানান, ‘বামফ্রন্ট সরকার থাকাকালীন রাজ্যে দেশপ্রেম দিবস পালন করা হত। কিন্তু এখন সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের প্রতি বিজেপি, তৃণমূলের মনের থেকে কোনো শ্রদ্ধা নেই। রাজ্যে এই দিন জ্যোতি বসু থাকাকালীন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। এখন সেটা আর ওরা বন্ধ করতে পারছে না।‘
তিনি বলেন - ‘নেতাজী অখণ্ড ভারত চাইতেন। ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে বিভাজন কল্পনাও করেননি তিনি। ধর্মের ভিত্তিতে ওঁনার ফৌজ আজাদ হিন্দ ফৌজ তৈরি করেননি।‘
বিমান বসু জানান, ‘এইভাবে ধর্ম হয় না। ধর্মকে সম্মান করতে হয়। সম্মান করা মানে সেই ধর্ম পালন করা নয়। এটা এক ধরণের বুজরুকি। এই বুজরুকি করে কখনও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃঢ় বন্ধন তৈরি করা যায় না। তাই নেতাজীর ১২৮ তম জন্মদিনে শপথ নিতে হবে, দেশকে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে হানাহানি, চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।‘
অন্যদিকে নেতাজীর জন্মবার্ষিকী প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম জানান, ’১৫ আগষ্টের বদলে ৫ আগষ্টকে বলা হচ্ছে স্বাধীনতা দিবস। ২৩ জানুয়ারী নেতাজীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে দেশপ্রেম দিবস পালন না করে ২২ জানুয়ারী নতুন দেশপ্রেম শেখানো হচ্ছে। নেতাজী মূর্তিতে মালা না দিয়ে তার একদিন আগে ধর্ম করতে চলে গেছে।'
সিপিআইএম-র রাজ্য সম্পাদক আরও বলেন - "ধর্ম, মন্দির, গীর্জা সব হবে। কিন্তু রাজনৈতিক নেতাদের কাজ সেটা নয়। সবাইকে মনে রাখতে হবে নেতাজী হিন্দু মহাসভাকে বলেছিলেন - যারা ভোট পাওয়ার জন্য ধর্মের রাজনীতি করছে, তাদেরকে পাড়া ছাড়া করা হবে।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন