আগামীকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠক বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বামফ্রন্ট, কংগ্রেস, আইএসএফ এবং বিজেপি। পয়লা বৈশাখ (বাঙালি নববর্ষের দিন) ‘রাজ্য দিবস’ ঘোষণার বিষয়ে আলোচনার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার একটি সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য "রাজ্যের গান" হিসাবে একটি গান নির্বাচন করার বিষয়েও আলোচনা করার কথা রয়েছে।
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে এক বিবৃতি পাঠিয়ে বামফ্রন্টের সহযোগী দলগুলি এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
ওই বিবৃতিতে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিমান বসু জানান, “অবিভক্ত বাংলাকে বিভক্ত করে পশ্চিমবঙ্গ করা হয়েছিল। দেশভাগের কারণে লাখ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য সেটা কখনোই আনন্দের মুহূর্ত ছিল না। তাই আমরা কোনো বিশেষ দিনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিবস হিসেবে পালনে বিশ্বাস করি না। একইভাবে, আমরা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এই বছরের ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গ স্থাপনা দিবস হিসাবে যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন সেই বিষয়েও আপত্তি জানিয়েছিলাম।”
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীও বলেছেন যে মঙ্গলবারের বৈঠকে তাঁর দলের কোনও প্রতিনিধিত্ব থাকবে না।
“রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক ডাকলে আমরা অবশ্যই আমাদের প্রতিনিধি পাঠাতাম। কিন্তু মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠানো মানেই সময়ের অপচয়” বলে জানিয়েছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী।
রাজ্য বিধানসভায় একমাত্র আইএসএফ প্রতিনিধি নওশাদ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তিনি বলেন, “আমি যদি আমন্ত্রণ পেয়ে থাকি তবেই বৈঠকে অংশ নেব কি না সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রশ্ন আসে। বিনা আমন্ত্রণে বৈঠকে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।”
বাংলা নববর্ষের দিনটিকে রাষ্ট্রীয় দিবস হিসাবে উদযাপন করার পিছনে দলীয় যুক্তি ব্যাখ্যা করে, বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের পিছনে কোনও বৈজ্ঞানিক বা ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি না থাকায় তারা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, "রাজ্য দিবস উদযাপনের নামে জনগণকে বিভ্রান্ত করার রাজ্য সরকারের চক্রান্তে আমরা অংশীদার হতে চাই না।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন