গত একমাস ধরে প্রবল সংঘর্ষে বিধ্বস্ত ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘে ১২০ দেশের সমর্থনে পাশ হয়েছে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব। আর সেই প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকেছে নরেন্দ্র মোদীর ভারত সরকার। ইজরায়েলের তরফে প্যালেস্তাইনে ঢুকে 'গণহত্যার' সমর্থনে ভারত সরকার যে অবস্থান নিয়েছে, দেশের মানুষ সেই অবস্থানকে সমর্থন করছে না বলে দাবি করেছে বামফ্রন্ট। বুধবার প্যালেস্তাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে মহাজাতি সদন থেকে রামলীলা ময়দান পর্যন্ত মিছিল করে সিপিআইএম ও বামফ্রন্টের মধ্যে থাকা অন্যান্য বাম দলগুলি।
এদিনের এই মহামিছিলের শুরুতে এবং শেষে দুটি সংক্ষিপ্ত জনসভা হয়। মিছিলের শেষে রামলীলা ময়দানের জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপি ও আরএসএসকে ইহুদি বিরোধী হিটলারের ‘সমর্থক’ বলে দাবি করেছেন সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি জানিয়েছেন, “ইহুদিদের নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল হিটলার। আর সেই হিটলারেরই সমর্থক আরএসএস এবং আরএসএসের মদতপুষ্ট বিজেপি। কিন্তু ওরাই এখন ইহুদিদের রক্ষা করার জন্য প্যালেস্তাইনের সাধারণ মানুষের গণহত্যাকে সমর্থন করছে।”
সেলিম আরও জানান, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই এই যুদ্ধের প্রধান মদতদাতা। সাম্রাজ্যবাদের নীতিতে তারা ইজরায়েলকে সমর্থন জানাচ্ছে। আর এশিয়ার মধ্যে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের দৌলতে আমেরিকার প্রধান সহকারী হয়ে উঠেছে ভারত। আমেরিকার সঙ্গে ভারতও যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থেকেছে। তবুও ১২০ দেশের সমর্থন পেয়ে রাষ্ট্রসংঘে পাশ হয়েছে সেই প্রস্তাব।”
প্যালেস্তাইনের প্রতি সংহতি মিছিলে সেলিম আরও বলেন, “গত ৭৫ বছর ধরেই প্যালেস্তাইনের মানুষের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দিয়েছে ভারত। তাহলে এখন যুদ্ধকে সমর্থন কেন? যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়। তাছাড়া যুদ্ধেরও নিয়ম আছে। ইজরায়েল কোনও নিয়মকানুনের তোয়াক্কা করে না। প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ অপরাধের অভিযোগ দায়ের করতে হবে। বামপন্থীরা সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধকে সমর্থন করে না। যুদ্ধ আসলে ব্যবসা। জিনিসের দাম, জীবিকা নিয়ে মানুষ যখন নাজেহাল, সরকার কোনও পদক্ষেপ নিতে নারাজ, তখন যুদ্ধোন্মাদনা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। বামপন্থীরা তার বিরুদ্ধেই থাকবে।”
এদিন বহুবছর পর কোনও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে সরব হয়ে পথে নেমেছে বামফ্রন্ট। আর সেই মিছিলে সিপিআইএম ছাড়াও ছিল অন্যান্য বাম দলগুলি যেমন, সিপিআই, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআইএমএল ও এসইউসিআই। এদিনের মিছিলে বহুদিন পর রাস্তায় চোখে পড়ার মতো জমায়েত লক্ষ্য করা গিয়েছে। মহাজাতি সদন থেকে শুরু হয়ে মিছিল শিয়ালদহ উড়ালপুল হয়ে মৌলালির কাছে রামলীলা ময়দানে শেষ হয়। মিছিলের জন্য এদিন কলেজ স্ট্রিট সংলগ্ন রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন