উত্তরবঙ্গে বাড়ির ছাদ কেন লাল, গেরুয়া হবে – জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠকে এই নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি, বাড়ির ছাদে লাগানোর জন্য কীভাবে ভিন্ন রঙের টিন আমদানি হচ্ছে উত্তরবঙ্গে, সেটা খতিয়ে দেখার জন্য মুখ্য সচিবকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে জেলাশাসকদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মাত্র পাঁচটা বাড়ি নিয়ে জয়পুর যদি পিঙ্ক সিটি হতে পারে, তাহলে রাজ্যের নিজস্ব রং এখানে কেন মানা হচ্ছে না? আমি সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে দেখলাম সেখানের সব বাড়ির ছাদে লাল বা গেরুয়া টিন লাগিয়ে দিয়েছে। যারা ওই টিন সরবরাহ করে তাদের বলতে হবে, এটা আমাদের রাজ্যের রং নয়। মুখ্যসচিব এই কাজ করবেন। যে যেমন খুশি জামাকাপড় পরতে পারে। নিজের ইচ্ছেমতো বাড়িও তৈরি করতে পারে। কিন্তু বাড়ির ছাদ লাল, গেরুয়া করে দেবে কেন?’’
শুধু এটাই নয়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রকে নিশানা করে বলেন, ‘‘মেট্রো স্টেশন সব গেরুয়া করে দিয়েছে। দলের রং কেন থাকবে? আমার দলের রং তো ব্যবহার করি না। পূর্ত দফতরকে বলব, নবান্নের রং সবাইকে পাঠাতে হবে। মুখ্যসচিবের মাধ্যমে সব দফতরে যাবে।’’
উল্লেখ্য, নীল-সাদা রঙ নিয়ে আগেই তৎপর হয়েছিল রাজ্য সরকার। সরকারি ভবনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত বাড়িতেও এই রঙ করা হলে করে ছাড় হবে বলেও ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। তবে বাস্তবে সেই রঙ কেন মানা হচ্ছে না, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রশ্ন, তবে কি মুখ্যসচিব টিনের সরবরাহকারীদের ডেকে জানাবেন, রাজ্যের নির্ধারিত রঙ ছাড়া অন্য রঙের টিন আনা যাবে না?
সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন বাড়ির রং নীল-সাদা করলে কর ছাড় মিলবে। লোকে তাতে সাড়া দেয়নি। কে কোন রং পছন্দ করবেন, সেটা মানুষের স্বাধীনতা। কে কী খাবে, বিজেপির সরকার ঠিক করে দিতে চায়, মুখ্যমন্ত্রীও এক রঙে সব রাঙাতে চান।’’
অন্যদিকে, বিধানসভায় বিজেপির সচেতক শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর অমানবিক মুখ খুব দ্রুত প্রকাশ পেয়েছে। যে কোনও দখলদারির পিছনে দিদিমণির দুষ্টু-দামাল ভাইয়েরা। উনি লাল, গেরুয়া বলে কী বোঝাতে চাইছেন? পুরসভা নির্বাচনের আগে পুর-এলাকাগুলো তো বিরোধীমুক্ত করেছিল তৃণমূল। তা হলে সেই নির্বাচন অবৈধ ঘোষণা করা হোক।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন