রাজ্যের পুরসভাগুলিকে নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে মন্ত্রী-আমলাদের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুকে বিধাননগরে সরকারি জমি দখলের কারণে দায়ী করলেন তিনি। হাওড়া পুরসভা নিয়েও রীতিমতো বিরক্ত হন মুখ্যমন্ত্রী।
সোমবার নবান্নের সভাঘরে তাহেরপুর পুরসভা এবং ঝালদা পুরসভা বাদে রাজ্যের সমস্ত পুরসভাগুলিকে নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, এই দুটি পুরসভা বিরোধী পরিচালিত। তাহেরপুর বামেদের দখলে এবং ঝালদা কংগ্রেসের দখলে। পুরসভাগুলি সাধারণ মানুষকে ঠিক মতো পরিষেবা প্রদান করছে কিনা, সমস্ত সরকারি নিয়ম মানছে কিনা তা পর্যালোচনা করার জন্য বৈঠক ডেকে ছিলেন মমতা ব্যানার্জি। সেই বৈঠকেই সুজিত বসু, গৌতম দেব সহ তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক, কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
বিধাননগর পুরনিগমের কাউন্সিলররা কাজ করছেন না বলে অভিযোগ করেন মমতা ব্যানার্জি। সরকারি জমিও দখল হয়ে যাওয়া নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "রাজারহাটে কম্পিটিশন করে ইচ্ছামতো সুজিত বোস লোক বসাচ্ছে। কেন বাইরের লোক বসবে? কত টাকার বিনিয়মে? কারা টাকা নিয়েছে? আমি জানতে চাই। কেন বিধাননগর পুরনিগমের কাউন্সিলররা কাজ করেন না? রাস্তা ঝাঁট দেয় না। এবার কি আমাকে রাস্তা ঝাঁট দিতে বেরোতে হবে?"
তিনি আরও বলেন, "একটা গ্রুপ তৈরি হয়ে গেছে। খালি জায়গা দেখলেই লোক বসিয়ে দিচ্ছে। আপনাদের টাকা খাওয়ার জন্য বাংলার পরিচিতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জমি পেলেই রাজ্য সরকারের জমি বেচে দিচ্ছেন। যেখানে পারছেন দখল করছেন। মিউনিসিপ্যালিটিগুলি খুব বাজে কাজ করছে।"
হাওড়া পুরসভার ভূমিকাতেও অসন্তুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "এখানে জঞ্জাল পরিষ্কার হয় না। রথীন চক্রবর্তী হাওড়াটাকে একেবারে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। সরকারি সম্পত্তি দখল হয়ে যাচ্ছে। পুলিশ বসে বসে দেখছে। এমন অনেক রাস্তা রয়েছে যেখানে অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে পারবে না। রাস্তায় নোংরা পড়ে আছে কিন্তু দেখার কোনও লোক নেই।"
কলকাতার হাতিবাগান মার্কেট এবং গড়িয়াহাট নিয়েও কলকাতা পুরসভাকে সতর্ক করেছেন মমতা ব্যানার্জি। তিনি বলেন, হাতিবাগানে কখনও তাকিয়ে দেখেছেন? কী অবস্থা ওখানে। গড়িয়াহাটেও দেখলাম। লাল-কালো প্লাস্টিক লাগিয়ে সবাই বসে পড়েছে। আমি কাউকে ব্যবসা করতে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু সবকিছুর একটা সিস্টেম আছে।
এই বৈঠকের পরই পুর কমিশনার পদে রদবদল করলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক চলাকালীনই তিনি বলেছিলেন, "বিনোদ কুমার ফের পুর সচিব পদে ফিরছেন। এখন সঞ্জয় বনসল রয়েছেন।" বৈঠকের পরই বিনোদ কুমারের পুর সচিব পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন