শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা থেকে সাসপেনশন হওয়া বাঁচালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতার হয়ে স্পিকারের কাছে ক্ষমা চাইলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূল নেত্রীর এই আচরণে জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলার রাজনৈতিক মহলে।
সোমবার বিধানসভায় রাজ্যপালের বক্তৃতার প্রতিক্রিয়া ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রী এবং বিরোধী দলনেতার। নিজের ভাষণে সরকারী তহবিলের অপব্যবহার এবং সিনিয়র পুলিশ ও আমলাদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যপালের কেমন আচরণ করা উচিত, তা নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর এই মন্তব্য রেকর্ড করার অনুমতি দেননি। এর জেরে মেজাজ হারান তিনি এবং বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে ওয়াকআউট করেন।
যদিও ডিন সম্পর্কে বিজেপি বিধায়কদের মন্তব্য স্পষ্ট শোনা যায়নি, কিন্তু বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্পিকারের কার্যকারিতা নিয়ে বিভ্রান্তি প্রকাশ করায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনা যেতে পারে। তিনি বলেন, "আমার পূর্ণ অধিকার আছে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধীকার ভঙ্গের প্রস্তাব আনার।"
স্পিকারের কাছ থেকে ইঙ্গিত পাওয়ার পরই শুভেন্দু অধিকারীকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেন ডেপুটি চিফ হুইপ তথা তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তখনই নন্দীগ্রামের বিধায়কের হয়ে ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী। স্পিকারের কাছে তিনি অনুরোধ করেন বিরোধী দলনেতাকে ক্ষমা করে দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, "অত্যন্ত লজ্জাজনক আচরণ করেছেন বিরোধী দলনেতা। ওঁরা সবসময় এরকম কাজ করেন। সর্বত্র এই ধরনের ভাষা প্রয়োগ করেন। আমাদের বিরুদ্ধেও এরকম মন্তব্য করেন। আমি ওঁর (শুভেন্দু অধিকারী) হয়ে আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। দয়া করে ওঁকে ক্ষমা করে দিন, ওঁদের সকলকে ক্ষমা করে দিন।"
তাঁর হয়ে স্পিকারের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারীর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে, সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, "বিধানসভায় আমাকে কথা বলা থেকে বিরত রাখতে, একটি অসম্ভব পরিস্থিতি তৈরি করেছিল তৃণমূলের বিধায়করা। আমার কথা শুনলে বাংলার খারাপ হবে না, বরং ভালো হবে।"
স্পিকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, "বিষয়টা কেবল রেকর্ড থেকে আমার বক্তৃতা মুছে দেওয়া নয়, স্পিকার যদি সিদ্ধান্ত নেন আমার বক্তৃতায় কী থাকা উচিত, কী থাকা উচিত নয় - সেক্ষেত্রে তাঁর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকছে।"
তবে নিজের ভাষণে বিরোধী দলনেতাকে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। বিরোধী দলনেতার মন্তব্যকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলে বর্ণনা করেছেন তিনি। তিনি বলেন, "একজন বিরোধী নেতা কি নির্দেশ দিতে পারেন যে ইডি-সিবিআই কোথায় অভিযান চালাবে? তিনি কি রাজ্যপাল সম্পর্কে এমন কথা বলতে পারেন?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন