মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের লাইভ চলাকালীন 'কমেন্ট সেকশনে' রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী তথা হাওড়া মধ্যের তৃণমূল বিধায়ক অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন এরশাদ সুলতান ওরফে শাহিন নামের এক যুবক। গ্রেফতার করা হয় ওই যুবককে। বুধবার ওই যুবককে মুক্তির নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা।
বিচারপতির পর্বেক্ষণ, একজন নাগরিকের বাক স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে পুলিশ। বিচারপতির নির্দেশ, বুধবার বিকেল ৫ টার মধ্যে এরশাদকে মুক্তি দিতে হবে।
গত ২৪ জুন নবান্ন সভাঘরে পুরসভার প্রশাসনিক কর্তা, মন্ত্রিসভার সদস্য এবং পদস্থ আমলাদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে হাওড়া পুরসভা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগও করেন তিনি। সেই বৈঠকের লাইভ সম্প্রচার হচ্ছিল বিভিন্ন সমাজমাধ্যমে। সেই লাইভের কমেন্টে এসে এরশাদ সুলতান অভিযোগ করেন, ‘‘অরূপ রায় হাওড়া পুরসভার ২৭ এবং ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে পুকুর বুজিয়ে ফেলেছেন।’’
এরশাদের সেই কমেন্টের প্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে শিবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হাওড়া মধ্য বিধানসভা এলাকার তৃণমূল নেতা সুশোভন চট্টোপাধ্যায়। এরপর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩০ জুন এরশাদকে থানায় ডেকে পাঠানো হয় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। জিজ্ঞাসাবাদের পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা গেছে, হাওড়া আদালতে হাজির করানো হলে আদালত তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজত দেয়।
অন্যদিকে, এরশাদের এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তাঁর পরিবার। বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানিতে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘‘কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে কেউ কোনও অভিযোগ করলে বা ক্ষোভ জানালে, তাঁকে গ্রেফতার করা হবে? যাঁর বিরুদ্ধে বলেছেন, সেই অরূপ রায় কি অভিযোগ করেছেন? এই ঘটনায় পুলিশ নাক গলিয়েছে। এর মধ্যে তাদের ঢোকার কথা নয়। এক্তিয়ারও ছিল না। দু’জনের মধ্যে গোলমাল বা কাদা ছোড়াছুড়ি হল, আর তৃতীয় ব্যক্তি অভিযোগ জানানোয় এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে নিল? এটা আইন?’’
৩০ জুন শিবপুর থানার সারাদিনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন