কলকাতার তিলজলায় সাত বছরের শিশুকে যৌন নির্যাতন এবং খুনের মামলায় অভিযুক্তকে মৃত্যুদণ্ড দিল আদালত। আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালতে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা হয় এই মামলার। রায় ঘোষণার সময় এই ঘটনাটিকে 'বিরলের মতো বিরলতম অপরাধ' বলে আখ্যা দিয়েছে আদালত। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এই ঘটনাটি ঘটে।
২০২৩ সালে ২৬ মার্চ - সেদিন সকালে ময়লা ফেলার জন্য নীচে নেমেছিল শিশুটি। তারপর থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় সে। প্রথমে পুলিশের বিরুদ্ধে শিশুটির খোঁজ করতে সাহায্য না করার অভিযোগ উঠলেও পরে ওই আবাসনেরই তিন তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় শিশুটির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়লা ফেলে ফেরার সময় শিশুটির হাত ধরে টেনে নিজের ঘরে নিয়ে যায় অভিযুক্ত এবং শিশুটির উপর যৌন নির্যাতন করে। এবং পরে হাতুড়ি জাতীয় কোনও ভোঁতা অস্ত্র দিয়ে শিশুটির মাথায় মেরে তাকে খুন করা হয়।
বৃহস্পতিবার আলিপুর বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের বেঞ্চে ছিল এই মামলার শুনানি। শুনানিতে ধৃত অশোক শাহকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৬৩, ২০১, ৩৭৭, ৬, ৩৭৬ এ ও বি এবং ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারপতি। অপহরণ, তথ্য প্রমাণ লোপাট, ধর্ষণ এবং খুন সব ধারাতেই দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করেছেন তিনি।
এদিন শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শিশুটির উপর অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে। এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম। সাত বছরের শিশু, যার খেলা করার বয়স, নিজেকে বাঁচানোর সামর্থ্য তার ছিল না।
সরকারি আইনজীবী মাধবী ঘোষ মাইতি এদিন আদালতে জানান, ‘‘বড়দের কারও সঙ্গে নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে অনেকে তাঁর পোশাক বা চরিত্রের দিকে আঙুল তোলেন। এটা তো সাত বছরের একটা ফুটফুটে মেয়ে! তার খেলা করার বয়স। তাকে এমন নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে। মুখ চেপে ওকে ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে ধর্ষণ করা হয়। মেয়েটির বাঁচার অদম্য ইচ্ছা ছিল। সে আসামির হাতে কামড়ে দিয়েছিল। পালানোর জন্য ছটফট করেছিল। কিন্তু অত বড় মানুষের সঙ্গে সে পেরে ওঠেনি। তাই এটা বিরলের মধ্যে বিরলতম ঘটনা।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন