১০ বছর পর নিজের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে জয়ী হলেন বীরভূমের রেখা পাল। রাজ্য সরকার বনাম রেখার মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় গেল রেখার পক্ষেই। আদালতের নির্দেশ, বিবাহিতা মেয়েকে পিতৃকুলের সদস্য হিসেবেই স্বীকৃতি দিতে হবে।
শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে রেখা পালের মামলাটি ওঠে। ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, রেখাকে পিতৃকুলের সদস্য হিসেবেই মেনে নিতে হবে। ফলে পৈতৃক সম্পত্তির অধিকার রেখা পালেরও থাকবে। বিবাহিতা হলেও রেখার ন্যায্য অধিকার খর্ব করার অধিকার কারুর নেই। ফলে পিতৃকুলের সদস্য হিসেবেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অধিকৃত জমির বদলে চাকরি বা ক্ষতিপূরণ পাবেন রেখা পাল।
ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল বক্রেশ্বরের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা নিয়ে। প্রকল্পের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকার। ২০১২ সালে সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়েছিল যাঁদের জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল ক্ষতিপূরণ স্বরূপ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে তাঁদের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়া হবে। ওই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী চাকরির আবেদন জানিয়েছিলেন রেখা পাল। কিন্তু রাজ্য সরকার জানিয়ে দেয় রেখা বিবাহিতা। তাই পিতৃকুলের জমির অধিকার তাঁর নেই। ২০১৩ সালে রাজ্যের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন রেখা পাল।
মামলাটি ওঠে আদালতের তৎকালীন বিচারপতি অশোক দাস অধিকারীর বেঞ্চে। তিনি জানিয়েছিলেন, বিবাহবিচ্ছিন্না কন্যা যদি পিতৃকুলের সদস্য হতে পারেন তাহলে বিবাহিতা রেখা কেন পারবেন না? রেখাকে পিতৃকুলের সদস্য হিসেবেই মেনে নিতে হবে। কিন্তু রাজ্য সরকার বিচারপতি অশোক দাস অধিকারীর নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। কিন্তু সেখানেও রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন