ডিওয়াইএফআই নেতা কলতান দাশগুপ্তের গ্রেফতারি নিয়ে রাজনৈতিক পারদ তুঙ্গে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দেওয়া একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপের ভিত্তিতে বাম যুবনেতাকে শনিবার ভোরে গ্রেফতার করে পুলিশ। যা নিয়ে সরব হলেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি। আন্দোলনকে ভাঙার জন্য এই কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করলেন। যদিও পুলিশের দাবি ওই অডিও-র সত্যতা যাচাই করেই কলতানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে মীনাক্ষী মুখার্জি বলেন, "আন্দোলনকে ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে। যাঁরা এই ষড়যন্ত্র করছেন সকলকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিতে চাই সমস্ত বামকর্মীদের জেলে ঢুকিয়ে দিলেও এই আন্দোলনকে কেউ থামাতে পারবে না। সিনিয়র ডাক্তার, জুনিয়র ডাক্তার, গোটা রাজ্যের মানুষ এই লড়াইয়ে রয়েছেন"।
তিনি আরও বলেন, "এইসব করে যদি রাজ্যের শাসক মনে করে যে বিনীত গোয়েলের অপসারণের দাবি থেকে আমাদের সরিয়ে দেবে, সেটা হবে না। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন যে ওনার চেয়ার চলে যাবে কিনা। আমরা তাঁকে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, এটা চেয়ার দখলের লড়াই নয়। এটা দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতিরাজের বিরুদ্ধে লড়াই। এই লড়াই করতে গিয়ে যদি কারুর চেয়ার চলে যায় তো চলে যাবে। রাজ্যের মানুষ সেই জন্যও প্রস্তুত হয়ে আছেন। আর এস এস প্রধান মোহন ভাগবতের রাজ্য সরকারের প্রতি সমর্থন পাওয়ার পর থেকেই বামপন্থীদের উপর আক্রমন বেড়েছে। কলতান দাশগুপ্তকে পরিকল্পনা মাফিক গ্রেফতার করা হয়েছে"।
বাম ছাত্র যুবদের তরফ থেকে রাজ্যজুড়ে থানা ঘেরাও কর্মসূচীর ডাক দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে এদিন সাংবাদিক বৈঠকে ডিসি অনীশ সরকার বলেন, ‘ভাইরাল অডিওতে দু’জনের মধ্যে কথোপকথন শোনা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জন সঞ্জীব দাস। তিনি হালতুর বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অন্য জন হলেন কলতান দাশগুপ্ত, সিপিআইএম-র যুব সংগঠনের নেতা। ওই অডিও সংবাদমাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়েছে। আমরা তার সত্যতা যাচাই করে দেখেছি। অডিয়োর সত্যতা নিয়ে কোনও সংশয় নেই’।
পুলিশ আরও জানায়, তদন্তের সময় এই স্বর মিলিয়ে দেখা হবে। অডিওতে আরও তিনজনের নাম পাওয়া গেছে। তাঁদের পরিচয় নিয়েও তদন্ত হচ্ছে। সাহেব, দাদু এবং বাপ্পা কারা তা এখনও জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের দেওয়া অডিওর ভিত্তিতে শনিবার সিপিআইএমের যুব নেতা কলতান দাশগুপ্তকে গ্রেফতার করে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ। রাজ্য সরকারকে বিপাকে ফেলতে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নায় হামলার ছক কষা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কুণাল। এই নিয়ে ফোনালাপের একটি অডিও ক্লিপও প্রকাশ করেছেন তিনি। (এই অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি পিপলস্ রিপোর্টার)।
গ্রেফতার হওয়ার পর কলতানের দাবি, মূল আন্দোলন থেকে নজর ঘোরাতেই শাসক এবং প্রশাসন যৌথভাবে এই নাটক করছে। তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই এর পিছনে ষড়যন্ত্র আছে। না হলে, নির্যাতিতার বিচারের আসল আন্দোলনের থেকে এ ভাবে দৃষ্টি কেন ঘুরিয়ে দেওয়া হল?”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন