বুধবার মধ্যরাতে আরজি করে হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের সন্ধান চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট করল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে প্রায় ৬০টি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে। যেখানে বহু পুরুষের সাথে বেশ কয়েকজন মহিলার ছবিও রয়েছে। লালবাজার সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ছবি শেয়ার করে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে লেখা হয়েছে, “সন্ধান চাই: নীচের ছবিতে যাদের চেহারা চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের সন্ধান জানা থাকলে অনুরোধ, জানান আমাদের, সরাসরি বা আপনার সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে।“
ছবিগুলি হামলার ঘটনার ভিডিওফুটেজ থেকে নেওয়া হয়েছে বোঝা যাচ্ছে। ছবিতে পরিষ্কারভাবে দেখতে পাওয়া মুখগুলি লালরঙের বৃত্ত দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ট্রেনি চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে বিচারের দাবিতে বুধবার রাত দখলের কর্মসূচিতে আরজি কর হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছিলেন বহু মানুষ। বিভিন্ন মিডিয়া সূত্র মারফত জানা গেছে, আন্দোলনকারীদের ভিড়ের সুযোগ নিয়ে একদল দুষ্কৃতী হাসপাতালের জরুরি বিভাগের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালায়। হাসপাতালের এইচসিসিইউ (হাইব্রিড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট), সিসিইউ (ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট)-তে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তছনছ করে দেওয়া হয়েছে ওষুধের স্টোররুমও। হাসপাতালের তিন তলা পর্যন্ত উঠে হামলা চালিয়েছে দুষ্কৃতী বাহিনী।
আন্দোলনকারী ডাক্তার পড়ুয়াদের মঞ্চে ভাঙচুর চালানো হয়। আরজি করের পুলিশ ফাঁড়ি, ব্যারাক, ওসির ঘরেও তাণ্ডব চালানো হয়েছে। পুলিশের গাড়িতেও হামলা করা হয়েছে। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সিসি ক্যামেরার সার্ভার রুম। হামলা থেকে বাঁচতে গাইনি ওয়ার্ড ও লিফটে লুকোতে হয় পুলিশকে বলে জানা গেছে।
বেশ কিছুক্ষণ তাণ্ডবের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটায় র্যাফ। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
রাতেই ঘটনাস্থলে যান সিপি বিনীত গোয়েল। বারবার কলকাতা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠায় মিডিয়ার সামনে মেজাজ হারিয়ে ফেলেন তিনি। তিনি বলেন, “কলকাতা পুলিশ কী করেনি? এই মামলায় সবকিছু করা হয়েছে। প্রমাণ সংগ্রহ করতে আমার কর্মীরা দিনরাত কাজ করেছেন। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমরা পরিবারকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেছি। আমরা পরিবারের সঙ্গে স্বচ্ছ থেকেছি। প্রত্যেকের সঙ্গে স্বচ্ছ থেকেছি। অন্তর থেকে বলছি, আমরা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করিনি। সিবিআই যদি সেটা প্রমাণ করতে পারে...। আমরা দায়িত্বশীল বাহিনী। এভাবে আমরা প্রমাণ নষ্ট করতে পারি না।"
এই ঘটনার পর পুলিশের শীর্ষ কর্তাদের ফোন করে সিবিআই। চারতলার সেমিনার হলে যেখানে ওই মহিলা চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছে, সেখানে হামলাকারীরা গিয়েছে কিনা জানতে। পুলিশ জানিয়েছে, সেমিনারে হলে ঢুকতে পারেনি দুষ্কৃতীরা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন