মধ্যরাতে গার্ডেনরিচে ভেঙে পড়ল নির্মীয়মান বহুতল। কলকাতা পুরসভার ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের হাজারি মোল্লা বাগান এলাকায় ৫১৩/৫ ব্যানার্জি পাড়া লেনে এই ঘটনা ঘটেছে। দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। গুরতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ১৫ জনকে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। ধ্বংসস্তূপের নীচে এখনও অনেকে আটকে রয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিআরএফ।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত ১২টার কিছু আগেই ঘটে এই দুর্ঘটনা। আচমকা নির্মীয়মান একটি পাঁচতলা ভবন আশেপাশের ঝুপড়ি বাড়িগুলির ওপর ভেঙে পড়ে। এই দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়া বহুতলটি সংলগ্ন অপর একটি বহুতল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হেলে রয়েছে সেটি।
ঝুপড়ি ঘরগুলিতে মোট কত জন ছিলেন তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি এখনও। ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর রাস্তা বেশ সংকীর্ণ হওয়ায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকলের পৌঁছতে বেশ কিছুটা সময়ও লেগে যায়, যা নিয়ে ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় উন্নত ভারি যন্ত্রপাতিও আনা যায়নি বলে জানিয়েছে এনডিআরএফ। এখনও পর্যন্ত ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে থাকা ৬ জনকে তারা চিহ্নিত করতে পেরেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এদের মধ্যে কেবল একজন রেস্পন্স করছেন, বাকিরা সাড়া দিচ্ছেন না। ফলে তাঁরা কী অবস্থায় আছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না।
ঘটনাস্থলে রাতেই পৌঁছে গেছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, যিনি ওই এলাকার বিধায়কও। তাঁর সঙ্গে ছিলেন দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুও। সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সাথেও দেখা করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ মালা রায়। রয়েছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গয়াল।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমি শুনলাম, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই বহুতলটি তৈরি করা হয়নি। যাঁরা বেআইনি কাজ করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। পরিবারের পাশে সরকার দাঁড়াবে। যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে, তৈরি করে দিতে বলব।’’
ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মৃতদের পরিবারপিছু পাঁচ লক্ষ টাকা এবং আহতদের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
বাম আমলকে নিশানা করে ফিরহাদ আরও বলেন, “বাম আমল থেকে এখানে বেআইনি নির্মাণ হয়ে আসছে। তখন বহুতল নির্মাণের জন্য প্রশাসনের প্রয়োজনীয় অনুমতি পেতে সমস্যা হত। তাই নির্মাতারা বেআইনি পথ ধরতেন। কিন্তু এখন আমরা পদ্ধতি অনেক সহজ করে দিয়েছি। তা-ও কেন কেউ কেউ এই পথ ধরছেন, জানি না। পুলিশকে বলা হয়েছে প্রোমোটারকে গ্রেপ্তার করার জন্য। এটা বেআইনি বাড়ি হচ্ছিল, আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন