উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ট্যাব বা মোবাইল ফোন কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। শুরুও হয়ে গিয়েছিল প্রস্তুতি। শিক্ষক দিবসের দিন পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহুর্তে পরিকল্পনা বাতিল করল রাজ্য সরকার। স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত বাতিলের কোনও কারণ জানানো হয়নি। কেবল জানানো হয়েছে, প্রশাসনিক কারণে আপাতত সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, করোনা কালে ২০২১ সালে ‘তরুণের স্বপ্ন’ নামে এই প্রকল্প শুরু করেছিল রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের এককালীন ১০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এই টাকা আগে শুধু দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের দেওয়া হলেও, চলতি বছর বাজেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় একাদশ শ্রেণী থেকেই পড়ুয়াদের টাকা দেওয়া হবে। সেই মতো বাজেটে অতিরিক্ত ৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দও করেছিল অর্থ দফতর।
সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই যাতে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া যায়, জুলাই মাস থেকে তার প্রস্তুতি শুরু হয়। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের সব জেলার ৮৭ জন ট্রেজারির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ১,৩৩৩ কোটি ৫৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা খরচের নির্দেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ট্রেজারি থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার স্কুল পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।
তবে সোমবার হঠাৎ করে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করল নবান্ন। ‘অ্যালটমেন্ট অর্ডার’ বাতিল করে জানানো হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল। কী সেই প্রশাসনিক কারণ তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি স্কুল শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে। পরবর্তীতে এই টাকা দেওয়া হবে কি না বা দিলে তা কবে, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
এবিষয়ে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘আরজি কর-কাণ্ডের পরে স্কুল পডুয়ারাও আন্দোলনে। তাতে ভয় পেয়ে আন্দোলন ভাঙার জন্য ঘুষ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। আন্দোলনের আগুন নেভানো যাবে না, বুঝে গিয়েই মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত বদলেছেন। তরুণের স্বপ্ন আপাতত দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।’’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন