জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুযায়ী, স্নাতক স্তরে 'কারিকুলাম অ্যান্ড ক্রেডিট ফ্রেমওয়ার্ক' আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে কার্যকর করতে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
শুক্রবার উচ্চশিক্ষা দফতরের সহ-সচিবের স্বাক্ষরিত এই নির্দেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রেজিস্ট্রারদের পাঠানো হয়েছে।
সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, স্নাতকের মেয়াদ দু'রকম হবে। তিন বছরের কোর্সের ক্ষেত্রে একজন পড়ুয়া সাধারণ স্নাতক হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
চার বছরের কোর্সের ক্ষেত্রে শেষ বছরে পড়ুয়াদের গবেষণা করতে হবে তার উল্লেখযোগ্য বিষয় নিয়ে। তবে তিনি বিবেচিত হবেন স্নাতক অনার্স গবেষণা-সহ উত্তীর্ণ হিসাবে। এই কোর্সে মাল্টিপল এন্ট্রি ও এগজিটও চালু হবে।
নির্দেশে জানানো হয়েছে, স্নাতকে দুটি সেমিস্টার ও বরাদ্দ ৪০ ক্রেডিটের (নম্বরের বদলে) জন্য মিলবে সার্টিফিকেট। চারটি সেমিস্টার ও ৮০ ক্রেডিটে পাওয়া যাবে ডিপ্লোমা। আর, ছটি সেমিস্টার ও তাতে বরাদ্দ ১২০ ক্রেডিটের জন্য মিলবে সাধারণ স্নাতক ডিগ্রি এবং, অটটি সেমিস্টার ও তাতে বরাদ্দ ১৬০ ক্রেডিটে পাওয়া যাবে অনার্স-রিসার্চ ডিগ্রি।
তবে, স্নাতকে প্রত্যেক পড়ুয়াকে প্রথম ও দ্বিতীয় বছরে অন্য বিষয়গুলোর সঙ্গে অবশ্যই স্কিল বেসড ভোকেশনাল কোর্স পড়তে হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়ে প্রবল বিরোধিতায় সরব হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। জাতীয় শিক্ষানীতি খতিয়ে দেখার জন্য বিশেষ কমিটিও তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, রাজ্য নিজস্ব শিক্ষানীতি তৈরি করবে। তবে সেই কমিটির রিপোর্ট সরকারিভাবে এখনও প্রকাশ করা হয়নি।
এরই মধ্যে এমন নির্দেশে শিক্ষা মহলে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে, সারা ভারত সেভ এডুকেশন কমিটির সম্পাদক তরুণকান্তি নস্কর জানিয়েছেন, জাতীয় শিক্ষানীতিতে চার বছরের ডিগ্রি কোর্স ও মাল্টিপল এগজিট ও এন্ট্রির যে কথা বলা হয়েছিল। আর, তা কার্যকর করার মাধ্যমে ওই জনবিরোধী শিক্ষানীতি চালু করা শুরু করল রাজ্য সরকার। এর ফলে ডিগ্রি পেতে গেলে এক বছর বেশি পড়তে হবে, তাতে ড্রপ আউট বাড়বে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (কুটা) সাধারণ সম্পাদক সনাতন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ পেলাম না!’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘এই রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন, শিক্ষাবিদরা বারবার জাতীয় শিক্ষানীতির বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু এই ধরনের নির্দেশ দিয়ে রাজ্য সরকার বুঝিয়ে দিল, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের সঙ্গে তাদের ফারাক নেই।’
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন