মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীরা। একুশের মঞ্চ থেকে মমতা ব্যানার্জী চাকরি প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, তার তীব্র বিরোধিতা করলেন কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা বিভাগের উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা।
গতকাল ধর্মতলার সভা থেকে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "১৭ হাজার চাকরি রেডি আছে। ডিপার্টমেন্টও রেডি ওগুলি ভর্তি করতে। কিন্তু মামলা চললে কী করে নিয়োগ হবে?" মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের সাথে অমত প্রকাশ করেছেন ধর্মতলায় অবস্থানরত চাকরিপ্রার্থীরা। নিয়োগের দাবিতে ৪৮৭ দিন ধরে তাঁরা অবস্থানরত। গতকালও তৃণমূলের সভা চলাকালীন তাঁরা ধর্মতলায় অবস্থান করছিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে তাঁদের দাবি, "নবম-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। কিন্তু কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা নিয়োগের কোনও মামলা আদালতে নেই। নিয়োগের কোনও স্থগিতাদেশ নেই। তাহলে কেন নিয়োগ বন্ধ করে রাখা হয়েছে?" মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জবাব চেয়েছেন আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীরা।
প্রসঙ্গত, গত ৫ মে রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সাংবাদিকদের বলেছিলেন, "শারীরশিক্ষার জন্য ৮৫০টি এবং কর্মশিক্ষার জন্য ৭৫০টি সহ মোট ১৬০০টি নতুন পদ এবং এসএসসি-র জন্য ৫ হাজার ২৬১টি নতুন শিক্ষক পদ মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হয়েছে।" এই ঘটনার পরই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে গত ১৯ জুন বিকাশ ভবন থেকে লিখিত নোটিশ জারি করা হয়েছিল।
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, নোটিশে নবম থেকে দ্বাদশ এবং গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের সাথে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিভাগের একই মেমো নম্বর দেওয়া ছিল। যার ফলে যাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলছে (গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী) তাদের সাথে কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষা বিভাগের কর্মীদের জুড়ে দিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিকল্পিতভাবে আটকে রাখা হয়েছে।
এসএসসি ছাত্র-যুব অধিকার মঞ্চের সম্পাদক সাফিয়া খাতুন জানিয়েছেন, "অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ থাকলেও কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষা নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টের কোনও স্থগিতাদেশ নেই। তা সত্ত্বেও নিয়োগ করছে না। মুখ্যমন্ত্রী হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন, মামলার কথা বলেছেন। নিয়োগ নিয়ে যদি মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা থাকত তাহলে কেন কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষার শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে আলাদা বিজ্ঞপ্তি জারি করল না? ইচ্ছাকৃতভাবে নবম-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তির সাথে আমাদের জড়িয়ে দিয়ে মামলার অজুহাত দেখানো হচ্ছে।"
কর্মশিক্ষা, শারীরশিক্ষায় শিক্ষক নিয়োগে যখন হাইকোর্ট ১১ মাস স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, তখন নবম-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগের ৯ টি কাউন্সেলিং হয়ে গিয়েছিল। বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, "২০১৬ সালে আমরা পঞ্চম-অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগে এসএসসি-র নোটিফিকেশনে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিষয়ের উপর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। প্যানেলে নাম থাকা সত্ত্বেও কারোরই চাকরি হয়নি।"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন