ক্রমশ তিক্ত হচ্ছে তৃণমূলের সাথে ও চিত্রশিল্পী শুভাপ্রসন্নের সম্পর্ক। এবার মমতা ব্যানার্জিকে নিয়ে কার্যত বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন তিনি। চিত্রশিল্পী বলেন, মমতা ব্যানার্জিকে কেউ চিনতেনই না। পাশাপাশি ফের একবার তাঁর গলায় শোনা গেল পরিবর্তনের সুর।
রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের আগে থেকেই তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন শুভাপ্রসন্ন। কলকাতা হোক বা পশ্চিমবঙ্গের অন্য জেলায় বামফ্রন্ট সরকার বিরোধী মমতা ব্যানার্জির প্রায় সমস্ত মিছিলেই দেখা যেত তাঁকে। তৃণমূল সরকারে আসার পরেও একাধিক মিটিং মিছিলে হেঁটেছেন শুভাপ্রসন্ন। কিন্তু সম্প্রতি কোথাও তাল কেটে গেছে মনে হচ্ছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেছেন তিনি।
বর্তমান বিতর্কের সুত্রপাত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ সিনেমাটিকে রাজ্যে নিষিদ্ধ করা নিয়ে। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের সাথে সহমত নন তিনি। বিতর্ক এতদূর গিয়েছে যে শুভাপ্রসন্নের বাড়ি গিয়ে তাঁকে বোঝান তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন চিত্রশিল্পী। এই নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, "মমতাকে কেউ চিনতো না, এমনও দিন গেছে যেখানে মমতা এলে মানুষ চলে যেতো। একবার মমতা একটা সভায় গিয়েছিল। তার বক্তব্য শুনে এলিট ক্লাসের লোকেরা হাসাহাসি করেছিল। একমাত্র আমি প্রতিবাদ করি।"
তিনি আরও বলেন, "মানুষ পরিবর্তন চেয়েছিল ঠিকই তবে মমতাকে দিয়ে নয়। সেই সময় আসলে মমতা ছাড়া বিকল্প মুখ ছিল না, তাই আমরা মমতাকে বেছে নিয়েছি। শাসক যদি শোষণ করে তাহলে আমরা আবার পরিবর্তন করে দেবো। প্রয়োজনে ফের পথে নামবো। আর আমার তো কোনো ভয় নেই। আমি তৃণমূলের সদস্যও নই কোনো নেতাও নই।"
বাংলায় 'দ্য কেরালা স্টোরি' নিষিদ্ধ হওয়া নিয়ে চিত্রশিল্পী বলেছিলেন, আমি কোনো শিল্পপ্রচেষ্টার বিরোধিতা করি না। সিনেমা ভালো কি খারাপ সেটা দর্শক বুঝবে। সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিলে তা দেখাতে আপত্তি কোথায়? মমতা ব্যানার্জির সিদ্ধান্ত কোনও রাজনৈতিক সুবিধা দেবে না। বরং নিষিদ্ধ করে ছবিটাকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হল বলেই আমি মনে করি।
সরকার বিরোধী মন্তব্যের পরই একাধিক তৃণমূল নেতা কটাক্ষ করেন শুভাপ্রসন্নকে। তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র বলেন, মমতা ব্যানার্জির জন্যই শুভাপ্রসন্নকে বাংলার মানুষ চিনতে পেরেছে। পাশাপাশি তিনি শুভাপ্রসন্নের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও তোলেন। যদিও নিজের অবস্থানে এখনও অনড় শিল্পী। বুধবার রাতেই শুভাপ্রসন্ন জানান, আমি হিপোক্রিট নই যে নিজের অবস্থান থেকে সরে আসবো।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন