‘শুনছি কেউ কেউ রটাচ্ছে আমি নাকি ইস্তফা দিচ্ছি...! এটা ভুল রটনা। আমি পদত্যাগ করছি না। আমি যে লড়াই শুরু করেছি, তার শেষ দেখে ছাড়ব।’ মঙ্গলবার, দুপুরে এজলাসে এসে এমনই মন্তব্য করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
এক বেসরকারি টিভি চ্যানেলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার নিয়ে সোমবার, কড়া অবস্থান নিয়েছে দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি পি এস নরসিমার বেঞ্চ। কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফানামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তারপর, মঙ্গলবার, আদালতের প্রথমার্ধে এজলাসে বসেননি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
তাঁর এই অনুপস্থিতি নিয়ে আদালত চত্বরে নানা জল্পনার কথা ছড়িয়ে পড়ে। আর, তা নিয়েই আদালতে এসে ক্ষোভ জানান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘প্রথমার্ধে বসিনি। আমাকে দিয়ে ইস্তফা দেওয়াও হয়ে গেল? আমি ইস্তফা দিচ্ছি, এটা রটে গেল। কিন্তু আমি পদত্যাগ করছি না। সেই প্রশ্নও আসে না।’
টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গ উঠলে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'ইন্টারভিউ যখন আমি দিয়েছি, তখন উত্তরও আমাকেই দিতে হবে।' একই সঙ্গে বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারের কপি এখনও আপলোড হয়নি শুনলাম। অর্ডার আসুক। উত্তর দেব।’
গত সোমবার, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এক পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘আমি বলতে চাই, বিচারাধীন মামলায় সাক্ষাৎকার দেওয়া বিচারপতিদের কাজ নয়।’ তিনি জানান, ‘যদি বিচারাধীন মামলা নিয়ে কোনও সাক্ষাৎকার দিয়ে থাকেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সেক্ষেত্রে তিনি ওই মামলার শুনানি করার অধিকার হারিয়েছেন। সেই ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ওই মামলার শুনানির জন্য নতুন বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে।‘
সেই প্রসঙ্গ টেনে এদিন আবেগ বিহ্বল হয়ে পড়েন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'কোনও মানুষই সারা জীবন থাকে না।' একইসঙ্গে, তিনি জানান, 'আমার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির কাছে বেশ কিছু আইনজীবী ভুল বোঝাচ্ছেন।'
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন