ফের প্রকাশ্যে এলো রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত। এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিলেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওম প্রকাশ মিশ্র। তাঁর দাবি এক সপ্তাহর মধ্যে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে ক্ষমা চাইতে হবে।
সি ভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল নেতা ওম প্রকাশ মিশ্র। প্রয়োজনে মানহানির মামলাও করতে পারেন তিনি। ওম প্রকাশ মিশ্রের আইনজীবী রাজ্যপালকে একটি নোটিশ দিয়েছেন। তাতে লেখা রয়েছে, চলতি মাসের ১ তারিখে রাত ১২টা নাগাদ এক ব্যক্তির কাছ থেকে হোয়াটসঅ্যাপ মারফত মেসেজ পান মিশ্র। মেসেজ বলা লেখা ছিল দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যপাল।
আইনজীবী আরও দাবি করেছেন, মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে ওম প্রকাশের নামে। এতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্যর ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। এর দায় নিতে হবে রাজ্যপালকেই। তাই নোটিশ পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে সিভি আনন্দ বোসকে লিখিতভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করার পথ বেছে নিতে হবে। যদিও এই বিষয়ে রাজভবনের তরফ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
উল্লেখ্য, জুন মাসে ওম প্রকাশের বিরুদ্ধে, শিক্ষক ও কর্মীদের বেতন সংক্রান্ত অনিয়ম, জমি হস্তান্তর সহ একাধিক দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দেন রাজ্যপাল। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য সঞ্চারী রায় মুখোপাধ্যায়ের ওপর সেই দায়িত্ব পড়ে। গত সোমবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ করেছেন।
নিয়োগ দুর্নীতিতে সুবীরেশ ভট্টাচার্য গ্রেফতার হওয়ার পর তাঁকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে সরিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। তাঁর বদলে অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদে নিয়োগ করা হয়েছিল যাদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওম প্রকাশ মিশ্রকে। নিয়োগ করেছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল লা গণেশন। তিন মাসের জন্য সেই দায়িত্ব পালন করেন ওম প্রকাশ। সেই সময়ই একাধিক দুর্নীতি করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো অধ্যাপক, উপাচার্যর দায়িত্ব সামলানোর পাশপাশি সরাসরি রাজনৈতিক যোগও আছে ওম প্রকাশের। দীর্ঘদিন তিনি কংগ্রেস করতেন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের পর তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন। ২১-র বিধানসভা নির্বাচনে শিলিগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে লড়েও ছিলেন। বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর ঘোষের কাছে হেরে যান।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন