চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রার্থীদের 'ভুয়ো নিয়োগপত্র বিলি' বির্তকে সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। এবার সেই বিতর্ক নিয়ে সরব হলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টভাবে জানালেন, ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে রাজ্য সরকার কোনও চাকরি দেয়নি, বরং চাকরির সুযোগ করে দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেছেন সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী।
মঙ্গলবার, ত্রিধারা সম্মিলনীর পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে মমতা বলেন, ৩০ হাজারের মধ্যে মাত্র ১০৭টা গন্ডগোল হয়েছে। তাই নিয়ে খেলে বেড়াচ্ছে! নিজেদের সরকার যে কত কেলেঙ্কারি করছে, তা আর বলার কথা নয়! যে ক্ষেত্রে ভুল বেরিয়েছে, সেখানে সরকার উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে। তাহলে এই নিয়ে এত হইচই কেন?
তাঁর আরও সংযোজন, যাঁদের ক্ষেত্রে গন্ডগোল হয়েছে, তাঁদের এক এক জনের কাছে দু-তিনটি সংস্থার ‘অফার লেটার’ ছিল। কাজ করতে গেলে ভুল হয় এবং ভুল করাও একটা অধিকার। রাজ্য সরকার কোনও চাকরি দেয়নি, কেবলমাত্র ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ করে দিয়েছে।
তবে, মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে সুজন চক্রবর্তী বলেন, এখন সব তালগোল পাকানো কথা বলা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী, মুখ্যসচিব সবাই বেসরকারি চাকরির কৃতিত্ব নিতে চেয়েছিলেন। তারপরে দেখা গেল সেগুলো প্রশিক্ষণ, ইন্টার্নশিপের ব্যাপার। তাতেও আবার ভুয়ো বেরোল! কৃতিত্ব যখন নিতে গিয়েছিলেন, তখন কেলেঙ্কারির দায়ও নিতে হবে। এখন সিআইআই বা অমুক এজেন্সির নাম করে পার পাওয়া যাবে না! জালিয়াতিতে সরকার যুক্ত, ধরা পড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন সংবাদপত্রে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল রাজ্যের কারিগরি শিক্ষা দপ্তর। ওই বিজ্ঞাপনে স্পষ্টভাবে লেখা ছিল "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে শুরু হওয়া উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পের অধীনে কারিগরি শিক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের চাকরির নিয়োগপত্র প্রদান।"
অন্যদিকে, মহালয়ার দিন এক ক্লিকে ২৯৩ টা পুজো এবং গতকাল(মঙ্গলবার) ত্রিধারা সম্মিলনীর ওই অনুষ্ঠান থেকেই ৪০০টি পুজোর ভার্চুয়াল উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গেও তাঁকে এক হাত নিয়ে ট্যুইট করেছেন সুজন চক্রবর্তী।
ট্যুইটে সিপিআই(এম) নেতা বলেন, "মহালয়ার দিনে এক ক্লিকেই না হয় ২৯৩ টা পুজো প্যান্ডেলের উদ্বোধন করলেন, কিন্তু ১১ বছরে কটা কারখানার গেট উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রীজি?"
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন