প্রায় ৯ মাস পর সশরীরে আদালতে পেশ হতেই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত পার্থ চ্যাটার্জি ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখার্জি। সোমবার তিনি বলেন, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের মাথা পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আজ আদালতে পেশ করা হয় অর্পিতা মুখার্জিকে। মামলার শুনানি চলাকালীন অর্পিতার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। আদালত সূত্রে খবর, অর্পিতার আই আইনজীবী বলেন, ইডির চার্জশিটে দেখা যাচ্ছে একাধিক ব্যক্তি নিয়োগ দুর্নীতির মাথা হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করেছেন। ফলে অর্পিতা মুখার্জি এই দুর্নীতির সাথে যুক্ত নয়। তাঁকে বলপূর্বক যুক্ত করা হয়েছে। অর্পিতা তাঁর আইনজীবী মারফত বলেন, তিনি শুধু পরিস্থিতির শিকার। মাস্টারমাইন্ড পার্থই।
ইডির আইনজীবী পাল্টা দাবি করেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে নিয়োগ দুর্নীতিতে অর্পিতা মুখার্জি সমান ভাবে যুক্ত। তাছাড়া তদন্তে অর্পিতার নামে ৩১টি এলআইসি-র নথি পাওয়া যায়। সেখানে নমিনি হিসেবে ছিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফলে দুজনেই নিয়োগ দুর্নীতির সাথে যুক্ত।
বিচারপতি অর্পিতা মুখার্জির আইনজীবীর উদ্দেশ্যে প্রশ্ন করেন, অনন্ত টেক্সট ফ্যাব প্রাইভেট লিমিটেডের সাথে অর্পিতার কী সম্পর্ক ছিল? আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন কিনা তাও জানতে চান তিনি। অর্পিতার আইনজীবী বলেন, ওই সংস্থা চালাতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মক্কেল কোনও ভাবেই সংস্থা থেকে আর্থিক ভাবে লাভবান হননি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখার্জির গ্রেফতারির ৫৮ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করে ইডি। চার্জশিটে বলা হয় পার্থর একাধিক জমি হস্তান্তরিত হয়েছিল অর্পিতার নামে। ঐ সব জমিগুলি পার্থর স্ত্রী বাবলি চট্টোপাধ্যায়ের নামে ছিল। বাবলির মৃত্যুর পর সেগুলি অর্পিতার নামে হস্তান্তরিত করা হয়েছে।
চার্জশিটে এও বলা হয়, অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ, তাইল্যান্ড, হংকং ও নেপাল সহ একাধিক দেশের মুদ্রাও পাওয়া যায়। জেরায় অর্পিতা জানিয়েছিলেন, এই মুদ্রা বা তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা এবং গয়না তাঁর নয়। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন লোক ওই টাকা তাঁর ফ্ল্যাটে রেখে যেতেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন