নির্বাচনের পর এক বছর অতিক্রান্ত। জনগণের দাবি দাওয়া নিয়ে এখনও সেভাবে বড় আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি বিরোধী দলনেতারা। ফলে নিজেদের কর্মক্ষমতা দিয়ে জনগণকে প্রভাবিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন তাঁরা। শনিবার, সি-ভোটার (C-Voter) প্রকাশিত একটি সমীক্ষা রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে - অসম, পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরালা এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরি - গত বছর যে পাঁচটি জায়গায় বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে - সেখানে বিরোধী দলনেতা জনগণের কাছে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা সেভাবে বাড়াতে পারেননি। অথচ ইস্যু ছিল একাধিক। যেমন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, পেট্রো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, সাধারণ মানুষের জীবন যাপন খারাপের দিকে যাওয়া।
সি-ভোটারের সমীক্ষায় জানা গেছে, চার রাজ্য এবং কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের ৩৮.২৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন গত এক বছরের মধ্যে তাঁদের জীবনযাত্রার মান পূর্বের তুলনায় খারাপ হয়েছে৷ ৩২.৭ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তাঁরা আগের মতোই আছেন। ২০২১ সালে সরকার গঠিত হওয়ার পর কোনও পরিবর্তন আসেনি তাঁদের জীবনে। একইসঙ্গে, ২৮.৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নতুন সরকারের আমলে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে।
অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে ৩৮.২৯ এবং ৩২.৭ শতাংশ মিলিয়ে মোট ৭০.৯৯ শতাংশ মানুষ বিরোধী দলনেতাকে যে ভূমিকায় দেখতে চান, তা হয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। জানা যাচ্ছে, আসামের ৩৬.৩৫ শতাংশ মানুষ কংগ্রেসের বিরোধী নেতা দেবব্রত সাইকিয়ার কার্যকলাপে একেবারেই সন্তুষ্ট নন। আর ১৯.৭৩ শতাংশ মানুষের প্রতিক্রিয়া - ‘কি আর করা যাবে’। সন্তুষ্ট মাত্র ১৩.৩৬ শতাংশ মানুষ।
পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রতি মোটেও সন্তুষ্ট নন ৪২.৫৫ শতাংশ মানুষ। ৩৫.৯৭ শতাংশ মানুষ কিছুটা হলেও সন্তুষ্ট তাঁর কার্যকলাপে। আর মাত্র মাত্র ১৬.৩৭ শতাংশ মানুষ তাঁর কাজে খুব খুশি হয়েছেন। যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর মতো বিজেপি নেতা বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় ১,২০০ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছিলেন।
সিপিআইএম শাসিত কেরালায় বিরোধী দলনেতা হিসাবে কংগ্রেসের ভি. ডি সতীসান-এর ভূমিকায় সন্তুষ্ট মাত্র ২০.৯৩ শতাংশ মানুষ। একেবারে সন্তুষ্ট নয় ২৫.৫৩ শতাংশ মানুষ। আর মোটামুটি ঠিক আছে বলে মনে করেন ৩৯.১২ শতাংশ মানুষ।
তামিলনাড়ুতে ৩৫.২৮ শতাংশ বিরোধী দলনেতা এডাপ্পাদি কে. পালানিস্বামীর প্রতি অসন্তুষ্ট। মোটামুটি ঠিক আছে বলে মনে করেন ৪১.৭১ শতাংশ মানুষ। আর ১০.৬৭ শতাংশ মানুষ পালানিস্বামীকে একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে দেখেন এবং তাঁর কাজে সন্তুষ্ট।
অন্যদিকে, পুড্ডুচেরির জনগণের একটি বড় অংশ সেখানকার বিরোধী নেতা শিবকে চেনেনই না। সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের ৫৭.২৭ শতাংশ মানুষ 'জানেন না/বলতে পারবেন না' বলে জানিয়েছেন। তবে, শিবের পারফরম্যান্সে মোটেও সন্তুষ্ট নয় মোট ১৭.৫৯ শতাংশ মানুষ এবং ১৬ শতাংশ ঠিক আছে বলে জানিয়েছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন