পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য পুলিশ বাহিনী রাজ্যের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার সময় পক্ষপাতদুষ্টভাবে কাজ করতে পারে না। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের এক সিঙ্গল বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে একথা জানিয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ এদিন রায় দিয়েছে যে, এখন থেকে স্থানীয় পুলিশ থানার অনুমতি চাওয়ার পরিবর্তে, সমস্ত রাজনৈতিক দল সংশ্লিষ্ট পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার বা সংশ্লিষ্ট জেলা পুলিশ সুপারের কাছ থেকে অনুমতি চাইতে পারে।
এদিন তাঁর পর্যবেক্ষণে বিচারপতি বলেন, "আমি আশা করি পুলিশ রাজনৈতিক দলগুলিতে কোনও বৈষম্য ছাড়াই সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি নিরপেক্ষ পদ্ধতি অবলম্বন করবে।" সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা এক মামলায় রায় দিতে গিয়ে শুক্রবার একথা জানান বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।
দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ভাঙড়ে সভা করার জন্য সিপিআইএম এবং আইএসএফ-এর আবেদন প্রত্যাখ্যান করে স্থানীয় পুলিশ। এরপরেই আদালতের দ্বারস্থ হয় দুই রাজনৈতিক দল।
বিচারপতি মান্থা তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক সমাবেশ ও কর্মসূচি পালনের অনুমতি দেওয়ার জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আদালতে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। "মনে হচ্ছে এই ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম তৈরি করার প্রয়োজন আছে।"
এই ক্ষেত্রে পুলিশ কর্তৃপক্ষের জন্য কিছু নিয়ম নির্ধারণের পাশাপাশি তিনি কমিশনারেট এবং জেলা পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টদের অফিসে সমাবেশের অনুমতির জন্য আবেদনের বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট বিন্যাসের রূপরেখা দিয়েছেন।
বিচারপতি মান্থার মতে, সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্তৃপক্ষের উচিত আলাদাভাবে বিভিন্ন আবেদন নিবন্ধন করা এবং একই সঙ্গে আবেদনের স্ট্যাটাস নিজ নিজ ওয়েবসাইটে আপলোড করা। তিনি আরও বলেন যে আবেদনটি "আগে এলে আগে সুযোগ" ভিত্তিতে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যার অর্থ আগের আবেদনকারীদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।
"এই অনুমতিতে কোন ধরনের বৈষম্য থাকা উচিত নয়" বলেও অভিমত বিচারপতি মান্থার। তিনি আরও বলেন, পুলিশকে সমাবেশের প্রস্তাবিত রুট ও আনুমানিক অংশগ্রহণের সংখ্যা নথিভুক্ত করতে হবে এবং সমাবেশটি যাতে শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন