'দ্রোহের কার্নিভাল’-এ অশান্তির আশঙ্কায় ১৬৩ ধারা জারি পুলিশের, চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা

People's Reporter: প্রধান বিচারপতিকে ইমেল করেন জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী। আজ দুপুরে বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুরের বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
'দ্রোহের কার্নিভাল’-এ অশান্তির আশঙ্কায় ১৬৩ ধারা জারি পুলিশের, চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা
প্রতীকী ছবি
Published on

মঙ্গলবার রেড রোডে বিকেল সাড়ে চারটে থেকে শুরু হবে পুজো কার্নিভাল। অন্যদিকে, আজই রানি রাসমণি রোডে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর ডাক দিয়েছে ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস’। সেখানেও বিকেল চারটে থেকে শুরু জমায়েত। এমত অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামাল দিতে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ এবং তার আশেপাশে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা (পূর্বের ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা) জারি করেছে কলকাতা পুলিশ।

অন্যদিকে, রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে ১৬৩ ধারা জারির নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। প্রধান বিচারপতিকে ইমেল করেন তাঁদের আইনজীবী। প্রধান বিচারপতি এই আবেদন মঞ্জুর করেছেন। গঠিত হয়েছে বিশেষ বেঞ্চ। আজ দুপুরেই বিচারপতি রবি কিষাণ কাপুরের বেঞ্চে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।  

একাদশ দিনে পড়েছে ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকদের অনশন। চিকিৎসকদের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সদর্থক ভূমিকা মেলেনি। এমত অবস্থায় মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) রানি রাসমণি রোডে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর ডাক দিয়েছে ‘জয়েন্ট প্লাটফর্ম অফ ডক্টরস’। যদিও এই মিছিলের অনুমতি দেয়নি পুলিশের। এই প্রতিবাদ মিছিলে অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। হাইকোর্টের একটি রায়কে এক্ষেত্রে হাতিয়ার করেছে পুলিশ। হাইকোর্ট জানিয়েছিল, রাজ্য সরকার আয়োজিত পুজোর কার্নিভালে কোনও রকম ব্যাঘাত সৃষ্টি করা যাবে না। 

এমত অবস্থায়, রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ এবং তার আশেপাশের এলাকায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা জারি করেছে কলকাতা পুলিশ। এই মর্মে সোমবার রাতে কলকাতা পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এই ধারা অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট এলাকায় একসঙ্গে চার জনের বেশি কেউ জড়ো হতে পারবেন না। লাঠি বা কোনও অস্ত্র নিয়েও ঘোরা যাবে না। কোনও ধরনের মিছিল, সভা, ধর্না, জমায়েত বা বিক্ষোভ প্রদর্শন করা যাবে না।

পুলিশের এই নির্দেশ প্রসঙ্গে আইনজীবী তথা সিপিআইএম সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "একটি আদেশের পরিপ্রেক্ষিতটা বাদ দিয়ে সুবিধামত একটি শব্দকে ব্যবহার করা অন্যায় ও অশোভন।"

কোন কোন জায়গায় জারি ১৬৩ ধারা?

রানি রাসমণি রোডঃ পূর্বে ডোরিনা ক্রসিং থেকে পশ্চিমে নেতাজি মূর্তি পর্যন্ত। উত্তরে হাওড়া মেট্রোর গ্রিন চ্যানেল এবং রানি রাসমণি পার্ক থেকে দক্ষিণে সেন্ট্রাল বাস টারমিনাস এবং ভাবানীপুর তাঁবু পর্যন্ত।

ওয়াই চ্যানেলঃ পূর্বে মেট্রো চ্যানেলের পুলিশ ফাঁড়ির পিছন দিক হয়ে জওহরলাল নেহরু রোডের ধার বরাবর ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত। পশ্চিমে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ এবং ট্রাম লাইনের পূর্ব দিক পর্যন্ত। উত্তরে এসপ্ল্যানেড রো পূর্ব থেকে দক্ষিণে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত।

নিউ রোডঃ পূর্বে ডোরিনা ক্রসিং থেকে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন পূর্ব দিকে ফুটপাথ পর্যন্ত। পশ্চিমেও ডোরিনা ক্রসিং থেকে প্রেস ক্লাব সংলগ্ন পশ্চিম দিকে ফুটপাথ পর্যন্ত। উত্তরে ডোরিনা ক্রসিং থেকে রানি রাসমণি অ্যাভেনিউ পর্যন্ত এবং দক্ষিণে মেয়ো রোড পর্যন্ত।

মেয়ো রোডঃ পশ্চিমে রেড রোড থেকে পূর্বে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত। রেড রোড থেকে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত দু’দিকের রাস্তাতেই জমায়েত নিষিদ্ধ থাকবে।

আউটরাম রোডঃ পূর্বে জওহরলাল নেহরু রোড এবং পশ্চিমে কেপি রোড, রেড রোড এবং ডাফরিন রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত। কেপি রোড, রেড রোড এবং ডাফরিন রোডের সংযোগস্থল থেকে জওহরলাল নেহরু রোড পর্যন্ত উত্তর এবং দক্ষিণ উভয়মুখী রাস্তাতেই জমায়েত নিষিদ্ধ।

অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে- রবীন্দ্রসদন থেকে ক্যাথিড্রাল রোডের পূর্ব দিকের ফুটপাথ থেকে সেন্ট পল্‌স ক্যাথিড্রাল গির্জা পর্যন্ত। পশ্চিমে ক্যাথিড্রাল রোডের পশ্চিম দিকের ফুটপাথ থেকে মোহর কুঞ্জের সামনের রাস্তা পর্যন্ত। উত্তরে সেন্ট পল্‌সের দক্ষিণ দিক থেকে দক্ষিণে হরিশ মুখার্জি রোড এবং এজেসি বোস রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত।

জওহরলাল নেহরু রোডে- ধর্মতলা ক্রসিং থেকে থিয়েটার রোড পর্যন্ত উভয় দিকের রাস্তায় জমায়েত নিষিদ্ধ। উত্তরে ধর্মতলা ক্রসিং থেকে দক্ষিণে শেক্সপিয়র সরণি এবং চৌরঙ্গি রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত।

কুইনস্‌ ওয়ে- পূর্বে ক্যাথিড্রাল রোড এবং শেক্সপিয়র সরণি সংযোগস্থল থেকে পশ্চিমে কাসুয়ারিনা এভিনিউ এবং হসপিটাল রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত। ক্যাথিড্রাল রোড এবং শেক্সপিয়র সরণির সংযোগস্থল থেকে ক্যাসুয়ারিনা এভিনিউ এবং হসপিটাল রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত উত্তর এবং দক্ষিণ উভয় দিকেই জমায়েত নিষিদ্ধ।

স্ট্র্যান্ড রোড - উত্তরে হাওড়া ব্রিজগামী রাস্তার সংযোগস্থল থেকে দক্ষিণে কমিশনারেট রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত। হাওড়া ব্রিজগামী রাস্তার সংযোগস্থল থেকে কমিশনারেট রোডের সংযোগস্থল পর্যন্ত পূর্ব ও পশ্চিম উভয় দিকের রাস্তাতেই জমায়েত নিষিদ্ধ।

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in