আইপ্যাকের সাথে কি তৃণমূলের সম্পর্ক শেষ হতে চলেছে চলেছে? পুরসভা নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর ঘটনাপ্রবাহ সেই দিকেই ইঙ্গিত করছিল। সেই জল্পনা আরও বাড়িয়ে দিল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য।
উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির হয়ে প্রচারের জন্য সোমবার বিকেলে লখনউ রওনা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সেখানে তাঁকে পুরভোটের প্রার্থী তালিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সীর দ্বারা প্রকাশিত তালিকাই সঠিক এবং চূড়ান্ত তালিকা। একজন সবাইকে খুশি করতে পারেন না। কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে।"
এরপর তৃণমূল এবং আইপ্যাকের চুক্তি শেষ হয়ে যাওয়া সংক্রান্ত মিডিয়া রিপোর্ট নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, "দয়া করে এমন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করবেন না যা দলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত নয়। যদি দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থাকে তাহলে জিজ্ঞেস করুন। এটা দলীয় বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত নয়।"
১০৮টি পুরসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পরই আইপ্যাকের সাথে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতবিরোধ প্রকাশ্যে এসে গেছে। প্রথমে তৃণমূলের 'অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ' এবং মিডিয়া গ্রুপে প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হয়। তারপরেই বিক্ষোভ, অবরোধ শুরু করেন কর্মী-সমর্থকরা। তাঁদের অভিযোগ, 'উপযুক্ত'রা বাদ পড়েছেন তালিকা থেকে। এই পরিস্থিতিতে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, 'এই তালিকা সঠিক নয়।'
এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন নিয়ে ফের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়, যার প্রতি পৃষ্ঠায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সী স্বাক্ষর করেন।
সূত্রের খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অগোচরে প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছিল প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা আইপ্যাক, যারা তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যম দেখাশোনা করে। তালিকায় বিভ্রান্তি নিয়ে প্রশান্ত কিশোরের সাথে ফোনে বচসা হয় পার্থবাবুর। সূত্র মারফত আরও জানা গেছে, বিষয়টি এতো দূর গড়িয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশান্ত কিশোর মেসেজ করে জানান, বাংলা, ত্রিপুরা এবং মেঘালয়ে তৃণমূলের সাথে আর কাজ করবে না আইপ্যাক। উত্তরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৎক্ষণাৎ ধন্যবাদ জানান।
রবিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের আগে এক সাংবাদিক বৈঠকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আইপ্যাকের সাথে দলের সম্পর্ক ছিন্ন হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি জানান, 'যাঁরা আইপ্যাকের সাথে সম্পর্ক রেখে চলে তাঁরা এই বিষয়ে বলতে পারবেন। আমি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করবো না। আমি মমতার সৈনিক। তাঁর নির্দেশ মতো চলি।'
সবমিলিয়ে বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে পিকে-র সম্পর্ক যে খুব একটা ভালো নেই, তা বলাই বাহুল্য। ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক কোথায় দাঁড়ায় সেদিকে তাকিয়ে সমগ্র রাজনৈতিক মহল।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন