করুণাময়ীতে ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন তুলে দিল পুলিশ। মধ্যরাতে বলপূর্বক টেনেহিঁচড়ে অনশনকারী চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ স্থল থেকে সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে আন্দোলন ডেকেছে সিপিআইএম, কংগ্রেস সহ সমস্ত বিরোধী দল। তিন আন্দোলনকারীকে এখনও খুঁজে পাওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই আন্দোলনস্থলে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। পুলিশের জমায়েত বাড়ার সাথে সাথে আন্দোলনের তেজও বাড়াচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। এরপর রাত ১২ টার কিছু পরে মাত্র কয়েক মিনিটেই তুলে দেওয়া হয় ৮৪ ঘণ্টার বিক্ষোভ অবস্থান, ৬১ ঘণ্টার অনশন।
গতকাল রাতে প্রথমে আন্দোলনকারীদের জমায়েতকে বেআইনি ঘোষণা করে পুলিশ। তার পর দুই মিনিট সময় দেওয়া হয় আন্দোলন তুলে নেওয়ার জন্য। কিন্তু আন্দোলনকারীরা না সরলে কার্যত টেনেহিঁচড়ে তাঁদের সকলকে বাসে তোলা হয়। রেহাই পাননি মহিলা আন্দোলনকারীরাও। দু'জন চাকরি প্রার্থী বাসের চাকার নিচে শুয়েই আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। পুলিশ তাঁদের নিরস্ত করে।
পুলিশের সাথে ব্যাপক ধস্তাধস্তি চলাকালীন বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। কয়েকজনকে অ্যাম্বুলেন্সে করে বিক্ষোভস্থল থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। জানা গেছে, প্রথমে সকলকে বিধাননগর উত্তর থানা ও নিউটাউন থানায় নিয়ে যাবার পর রাতেই তাঁদের ধর্মতলা, শিয়ালদহ এবং হাওড়াতে নামিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের অভিযোগ, আন্দোলনের তিন নেতাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এঁরা হলেন - ২০১৪-র বিক্ষোভরত টেট উত্তীর্ণদের সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক অর্ণব ঘোষ, অচিন্ত্য সামন্ত, অচিন্ত্য ধাড়া। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী এখনও নিখোঁজ তাঁরা। এঁদের একজনের ফোন বিক্ষোভ স্থল থেকে পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। একই অভিযোগ এঁদের পরিবারগুলোর। পুলিশের তরফ থেকে এই বিষয়ের এখনও কোনও মন্তব্য পাওয়া যায় নি।
আন্দোলনকারীরা পুলিশের উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, আজ বেলা ১১ টার মধ্যে এই তিনজনকে ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশে হওয়া আন্দোলন স্থলে হাজির করতে হবে। নইলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
মধ্যরাতে চাকরিপ্রার্থীদের উপর পুলিশের এই বর্বর আক্রমণের প্রতিবাদে আজ বেলা বারোটায় করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি নিয়েছে সিপিআইএম ছাত্র-যুব সংগঠন এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বিজেপিও।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন