আরজি কর কান্ডের প্রতিবাদে তৃণমূল সাংসদ পদ এবং রাজনীতি থেকে ইস্তফা দেবার পরেই নাম না করে তাঁকে কার্যত ব্যক্তিগত আক্রমণের রাস্তায় হাঁটলেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। যদিও তাঁর এই আক্রমণকে ভালোভাবে নেয়নি নেটিজেনরা। উল্টে নিজের এক্স হ্যান্ডেল (পূর্বতন ট্যুইটার) পোষ্টের কমেন্ট সেকশনে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন তৃণমূল নেতা।
এদিন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের ইস্তফার খবর প্রকাশ্যে আসতেই দেবাংশু ভট্টাচার্য নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “একজন ছেড়েছেন, আরেকজনও ছাড়ুন। স্রোতের অনুকূলে তো কচুরিপানাও ভাসে, যদি উল্টো দিকে সাঁতার কাটতে নাই পারলেন তাহলে মানুষ জন্ম বৃথা! যুদ্ধের সময় যারা পালায় কিংবা গা বাঁচিয়ে চলে, ইতিহাস তাদের লজ্জার নজরে দেখে।” অনুমান করা যায় এক্ষেত্রে তিনি সম্ভবত অপর বিদ্রোহী তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। কারণ আরজি কর কান্ডে প্রথম থেকেই একাধিক মন্তব্য করে তৃণমূলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন দলীয় সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়।
দেবাংশু ভট্টাচার্যের পোস্টের উত্তরে জনৈক বিশ্বজিত মজুমদার লিখেছেন, “ভাই দেবাংশু তোমার ওই দু’পাতার কবিতা লেখার ক্ষমতা নিয়ে জহর সরকারকে বিচার করতে যেও না। তোমার মত লোকেরা যারা নিজেরা অন্যায় না করলেও মেরুদণ্ডহীন ভাবে অন্যায়কে সহ্য করে যাওয়াও বিশ্বকবির ভাষায় সমান অপরাধী। তাই এখনো সময় আছে বাঁচতে চাইলে প্রতিবাদ করো না হলে মানুষের ক্ষোভে বাঁচবে না।”
প্রফেসর এক্স নামক এক প্রোফাইল থেকে দেবাংশুর পোস্টের উত্তরে লেখা হয়েছে, “নিজের মানুষ জন্ম বৃথা স্বীকার করার জন্যে আর নিজেকে স্রোত এর অনকুলে ভাসা কচুরিপানার সাথে তুলনা করার জন্যে সাধুবাদ জানাই।”
সায়ন্তন জানা নামক এক ব্যক্তি লিখেছেন, “আজকাল দুর্নীতির পক্ষে দাঁড়ালে তবে মানুষ জন্ম সফল হয় বুঝি? সত্যিকারের লড়াই করতে হলে, রাজ্য আর দল কে দুর্নীতি মুক্ত করতে লড়ুন। দলের দুর্নীতি চাপা দিতে যারা লড়ছে, ইতিহাস তাদেরই লজ্জার চোখে দেখবে।”
প্রসঙ্গত রবিবারই আরজি কর কান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে সাংসদ পদ এবং রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার। তাঁর মতে, “এই আন্দোলনে পথে নামা মানুষেরা অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ করছেন। অতএব রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে এই আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা সমীচীন হবেনা।”
তাঁর আরও অভিযোগ, “সংসদে নির্বাচিত হবার এক বছর পরে, যখন ২০২২ সালে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর চূড়ান্ত দুর্নীতির খোলাখুলি প্রমাণ দেখে প্রকাশ্যে মতামত দিই যে দল ও সরকারের এই ব্যাপারে অত্যন্ত সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন, তখন দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতা আমাকে হেনস্থা করেন।”
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন