আর জি কর কাণ্ডের পর রাতের শহরে কর্মরত মহিলাদের ‘রাত্রি সাথী’ প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। নবান্নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সম্ভব হলে মহিলাদের রাতের শিফট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন আন্দোলনকারী মহিলারা থেকে শুরু করে আমজনতা সকলেই। মঙ্গলবার বিধানসভায় মহিলাদের রাতের শিফট নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য সেই বিতর্ক বাড়িয়ে দিল।
উল্লেখ্য, ‘রাত্রি সাথী’ প্রকল্প চালুর ঘোষণার সময় মহিলাদের নাইট ডিউটি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, "যেখানে সম্ভব, যতদূর সম্ভব মহিলাদের নাইট ডিউটি থেকে স্পেয়ার করবার চেষ্টা হবে। জোড়ায় জোড়ায় কাজ করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।" মঙ্গলবার বিধানসভায় ধর্ষণ বিরোধী ‘অপরাজিতা বিল’ নিয়ে কথা বলার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কার্যত একই কথা বলেন।
তিনি বলেন, “মহিলারা যত কম সম্ভব ১২ ঘণ্টা ডিউটি করবে। যদি এমার্জেন্সি থাকে তার ডিউটি ডাক্তার বাড়াবে। আমরা মেয়েদের সুরক্ষার জন্য করেছি। যারা রাতে কাজ করতে চায় তারা অ্য়ালাউড। রাতে যদি কেউ কাজ করতে চান, তাদের ফুল প্রোটেকশন দেওয়ার জন্য এই রাত্রিসাথী করা হয়েছে।“
যদিও মহিলাদের রাতের শিফট নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। নির্যাতিতার বাবা জানিয়েছেন, “আজ এই যে মেয়েরা আছে, তাঁদের হয়তো রাত ১০টা-১১টার সময় এমার্জেন্সি প্রয়োজন পড়তে পারে, যাবে না সেখানে? তাহলে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে। ছেলে-মেয়ের বৈষম্য উনি দেখিয়ে দিচ্ছেন। এটা অবশ্যই সরকারের অক্ষমতা। কেন মেয়েদের সুরক্ষা দিতে পারছেন না? দুর্নীতিগুলো সামনে আনার চেষ্টা করুন।“
অন্যদিকে নির্যাতিতার মা বলেন, “আজ ডাক্তারি যাঁরা পড়ছেন, তাঁদের ছেলে-মেয়ে বিচার করা উচিত নয়। মেয়েরা ১২ ঘণ্টা ডিউটি করবে, ছেলেরা ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করবে, এটা তো মেয়েদের আরও ছোট করা হচ্ছে। বৈষম্য। মেয়েদের আরও হেনস্থা করা হচ্ছে এটা। এটা কেন হবে? এই বিল সমর্থন করব না।“
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন