জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের জন্য ৪৫ মিনিট সময় দেওয়া হলেও দু’ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ধরে চললো বৈঠক। কিছুক্ষণ আগেই সেই বৈঠক শেষ হয়েছে। এদিনের বৈঠকে জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে ১৭ জন আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন। যদিও এই বৈঠক থেকে আদৌ কোনও সমাধান সূত্র বেরিয়েছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি। এর আগে ‘বিচারাধীন বিষয়’ বলে লাইভ স্ট্রিমিং-এ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হলেও এদিনের বৈঠকের পুরোটাই লাইভ স্ট্রিমিং করা হয়েছে।
গত শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব এক ই-মেল মারফত জুনিয়র ডাক্তারদের জানিয়েছিলেন অনশন তুলে নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসতে হবে। যদিও জুনিয়র ডাক্তাররা অনশন না তুলেই এদিনের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। ধর্মতলার অনশন মঞ্চে এখনও চলছে জুনিয়র ডাক্তারদের আমরণ অনশন। এদিনের বৈঠকে অনশন তুলে নিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে সরব হন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা বলেন, স্বাস্থ্যসচিবের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযোগ রয়েছে। আপনি প্রমাণ চেয়েছেন। স্যারের হাত দিয়ে বেশ কিছু চিঠি বেরিয়েছে। উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা মানুষ অভিযুক্ত কি না প্রমাণ না পেলে তাঁকে অভিযুক্ত বলা যায় না। মুখ্যমন্ত্রীর কথার উত্তরে এক আন্দোলনকারী জানান, দোষ প্রমাণের আগে তাঁকে দোষী বলা যাবে না। তবে অভিযুক্ত বলা যেতে পারে।
এদিন আলোচনায় চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো জানান, আরজি করের মত দ্বিতীয় কোনও ঘটনা যাতে না ঘটে তা দেখা হোক। তিনি আরও বলেন, থ্রেট কালচারের পাশাপাশি যৌন হেনস্থার ঘটনাও ঘটে। থ্রেট কালচার প্রসঙ্গে বিরূপাক্ষ এবং অভীকের নাম উঠতেই মুখ্যমন্ত্রী থামিয়ে দেন এবং বলেন, যারা উপস্থিত নেই তাঁদের নাম নেবেন না।
এদিনের বৈঠকে উঠে আসে ১৪ আগস্ট রাতে আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা। যদিও সেই ঘটনা অভিযুক্তদের জামিন প্রসঙ্গে কিছু জানাননি মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক চলাকালীন একসময় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন জুনিয়র চিকিৎসকরা। থ্রেট কালচার প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আরজি করের প্রিন্সিপাল ৪৭ জনকে সাসপেন্ড করলেন কেন? কী ভাবে তিনি নিজে সিদ্ধান্ত নিলেন? রাজ্য সরকারকে জানানোর প্রয়োজন মনে করলেন না? এটা থ্রেট কালচার নয়? যার উত্তরে অনিকেত বলেন, কমিটি তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেবার পর সাসপেন্ড করা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, সব দাবি পূরণ করা হবে। কিন্তু একদিনে সব দাবি পূরণ সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে সমস্ত দাবি পূর্ণ হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন