নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক খাতের ১৬২০ কোটি টাকা নয়ছয় করেছে রাজ্য সরকার – সমাবেশে অভিযোগ সিটুর

নির্মাণ শ্রমিকদের ন্যূনতম ৮০০ টাকা দৈনিক মজুরি, শ্রম কোডের নামে নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা বিধি বাতিল সহ ৮ দফা দাবি সনদ এদিনের সমাবেশে পেশ করা হয়।
নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক খাতের ১৬২০ কোটি টাকা নয়ছয় করেছে রাজ্য সরকার – সমাবেশে অভিযোগ সিটুর
নিজস্ব চিত্র
Published on

নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক খাতের বরাদ্দ ১৬২০ কোটি টাকা নয়ছয় করছে রাজ্য সরকার। যার ফলে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। এই অভিযোগ তুলে বুধবার কলকাতায় বিক্ষোভ দেখালেন রাজ্যের কয়েকশ নির্মাণ শ্রমিক।

সিটু অনুমোদিত কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির ডাকে বুধবার কলকাতা কর্পোরেশনের পাশে একটি বিক্ষোভ সমাবেশ করেন নির্মাণ শ্রমিকরা। নির্মাণ শ্রমিক নেতৃবৃন্দের অভিযোগ, এই রাজ্যের নির্মাণ শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষা পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চনা এবং হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

সমাবেশে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজ্যের নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক খাতে বরাদ্দ ১৬২০ কোটি টাকা নয়ছয় করেছে তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার। বামফ্রন্ট সরকারের সময়কালে স্বাস্থ্যপরিষেবা সহ নানাবিধ সুবিধা পেতেন নির্মাণ শ্রমিক সহ অন্যান্য অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকরা। ২০১১ সালের পর থেকে এই সব কিছুই বন্ধ হয়ে যায়।

নির্মাণ শ্রমিকদের ন্যূনতম ৮০০ টাকা দৈনিক মজুরি, শ্রম কোডের নামে নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা বিধি বাতিল সহ ৮ দফা দাবি সনদ এদিনের সমাবেশে পেশ করা হয়।

এদিনের সভায় বক্তব্য রাখেন সিটু পশ্চিমবঙ্গ কমিটির সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, নির্মাণ শ্রমিক সংগঠনের সর্বভারতীয় নেতা দেবাঞ্জন চক্রবর্তী, নির্মাণ শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক প্রণব মজুমদার প্রমুখ। নেতৃত্বরা জানিয়েছেন, বাড়ি, রাস্তা সহ সমস্ত নির্মাণ কাজের ওপর ১ শতাংশ হারে শেষ ধার্য করেছিল বামফ্রন্ট সরকার। এই সেস থেকে পাওয়া তহবিল থেকে নির্মাণ শ্রমিকদের পেনশন, স্বাস্থ্য পরিষেবা, সন্তানদের পড়াশোনা সহ যাবতীয় অনুদান দেওয়া হতো। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর এই সমস্ত অনুদান বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কার্স ফেডারেশন জানিয়েছে, ২০১১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত সেস থেকে পাওয়া অর্থের পরিমাণ ১৬২০ কোটির টাকার বেশি। এই টাকা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে রাজ্যের কোষাগারে স্থানান্তরিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। একাধিকবার শ্রম মন্ত্রী সহ শ্রম দপ্তরে ডেপুটেশন দিলেও কোনো কাজ হয়নি।

এদিনের সমাবেশে রাজ্যের শাসক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক দুর্নীতি নিয়েও সরব হয়েছেন সিটু রাজ্য সভাপতি সুভাষ মুখোপাধ্যায়। পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর নাকের ডগায় সমস্ত দুর্নীতি হচ্ছে। উনি কিছু জানেন না এটা হতেই পারে না। সবকিছুর জন্য দায়ী উনি। আমি জানিনা এই দুর্নীতি সারদা দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে যাবে কিনা। যদি তাই হয় তাহলে গোটা মন্ত্রিসভা জেলে যাবে। আমাদের শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি হয়ে গিয়েছে। এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। বিজেপি তৃণমূল দুই সরকারই মানুষের ক্ষতি করছে।"

নির্মাণ শ্রমিকদের সামাজিক খাতের ১৬২০ কোটি টাকা নয়ছয় করেছে রাজ্য সরকার – সমাবেশে অভিযোগ সিটুর
"আপনি কোন হরিদাস পাল" - সাংবাদিককে ধমক! মমতা পাশে আছে জেনে ফের পুরনো মেজাজে অনুব্রত

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in