‘বনধ-টনধ’ করতে দেব না - মঙ্গলবার, শিলিগুড়িতে সরকারী সভায় এই হুংকার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, সেই হুমকির পাল্টা বার্তা দিল ৩৬ টি সরকারি কর্মচারী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। আগামী ৯ মার্চ, ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই ধর্মঘটে শামিল হবে রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটিও।
মঙ্গলবার, মধ্যরাতে একযোগে ধর্মঘটের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ ও রাজ্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ গুপ্ত চৌধুরি।
কেন্দ্রীয় হারে বকেয়া ডিএ-র (DA) দাবিতে, গত বৃহস্পতিবার একটানা ৪৮ ঘণ্টা (২০ ও ২১ ফেব্রুয়ারি) কর্মবিরতির ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই কর্মবিরতি আটকাতে নবান্নের তরফে একটি নোটিফিকেশন জারি করা হয়। যাতে বলা হয়, খুব জরুরি কারণ ছাড়া কেউ সোম এবং মঙ্গলবার কাজে যোগ না দিলে তাঁর চাকরি জীবনে ছেদ পড়বে।
তবে, এই নোটিফিকেশনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে নবান্নকে পাল্টা আইনি নোটিশ পাঠায় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কর্মবিরতির পাশাপাশি চলে ‘পেন-ডাউন’ কর্মসূচী। এবার সেই আন্দোলনের ঝাঁজ বাড়িয়ে একদিনের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ‘বঞ্চিত’ সরকারী কর্মচারীরা।
এ প্রসঙ্গে যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ পিপলস রিপোর্টারকে বলেন, 'আমরা কর্মবিরতির ডাক দিয়ে বলেছিলাম সরকার যদি আমাদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল না হয়, আমাদের দাবি মেনে না নেয়, তাহলে আমরা ধর্মঘটের দিকে যাব। আমরা সে কারণেই ৯ তারিখ ধর্মঘট ডেকেছি।'
তিনি বলেন, 'এই ধর্মঘটে সমস্ত ধরণের কর্মচারী সংগঠন সামিল হবে। বাম, কংগ্রেস সহ অন্যান্য দলের কর্মচারী সংগঠনগুলি এক জায়গায় হয়েই ৯ তারিখের এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।'
আন্দোলন নিয়ে ভাস্কর ঘোষ আরও জানান, 'তাতেও যদি সরকারের টনক না নড়ে, তাহলে আমরা লাগাতার ধর্মঘটের দিকে যেতেও পিছুপা হব না। আর, এর মাঝে আমাদের এই অবস্থান মঞ্চ এবং অনশন যেভাবে চলছে, সেভাবেই আমরা চালিয়ে নিয়ে যাব।'
আগামী ৯ তারিখ মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষা, এদিনে ধর্মঘট কেন? জবাবে ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'মাদ্রাসার পরীক্ষাটা কিন্তু ২৭ তারিখে ছিল। সেটি পরিবর্তন করে ৯ তারিখ করেছে। আমরা সরকারের কাছে আবেদন করছি, ৯ তারিখের পরীক্ষাটি চেঞ্জ করে অন্যদিন করুন। তারপরেই উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হবে।'
এদিন তিনি জানান, 'ধর্মঘট নিয়ে আজকেই সরকারকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। মৌলিক অধিকারের সপক্ষের আমাদের ধর্মঘট হচ্ছে। সুতরাং, ধর্মঘট পারমিশান করার জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়, সেই কমিটি গঠন করুক গভর্নমেন্ট।'
প্রসঙ্গত গত বুধবার, সরকারী কর্মীদের ৩ শতাংশ ডিএ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেন রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। কিন্তু, এই সামান্য ডিএ বৃদ্ধিতে সন্তুষ্ট নন মঞ্চের সদস্যেরা। তাঁরা বিষয়টিকে ‘ভিক্ষার দান’ হিসাবেই দেখছেন। তাঁদের দাবি, ডিএ কোনও ভিক্ষা নয়, এটি আমাদের ন্যায্য পাওনা।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন