উত্তপ্ত সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। মঙ্গলবার প্রশাসনের ১৪৪ ধারার নির্দেশকে খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, উত্তেজনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। এ ক্ষেত্রে পুরো এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। তাই ১৪৪ ধারা খারিজ করা হল। আদালতের নির্দেশ, ওই এলাকায় আরও সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন করতে হবে।
রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের প্রশ্ন, ‘‘গোটা সন্দেশখালি জুড়ে উত্তেজনা? তাহলে কেন গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি? এর পর তো বলবেন গোটা কলকাতা জুড়েই ১৪৪ ধারা জারি করতে হবে। মামলায় গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে। হালকা ভাবে নেবেন না।’’ রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি সেনগুপ্তের পর্যবেক্ষণ, ‘‘গত তিন বছর ধরে পুলিশ কোনও অভিযোগ নেয়নি বলে দাবি। এলাকার মহিলারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এত কিছু অভিযোগের পরে আদালত চোখ বন্ধ করে থাকতে পারে না।’’
অন্যদিকে, আজই সন্দেশখালি নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি অপূর্ব সিংহরায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, মানুষ রাতে ঘুমোতে যায় এটা ভেবে যে, মাথার উপর আদালত রয়েছে। এই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার এটাই সঠিক সময়। এই মামলায় আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে আদালতবান্ধব হিসাবে নিয়োগ করেছে আদালত। পাশাপাশি সরকারী আইনজীবী দেবাশিষ রায়কে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছেন। ২০ ফেব্রুয়ারি এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
উল্লেখ্য, ঘটনার সূত্রপাত গত ৫ জানুয়ারি। ইডি আধিকারিকরা রেশন দুর্নীতি মামলায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়ে ফেরেন। এরপর থেকে কার্যত নিখোঁজ শাহজাহান। খোঁজ চলছে শাহজাহানের। গত সপ্তাহে শাহজাহান, উত্তম সর্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে পথে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন সন্দেশখালির মহিলারা।
তাঁদের অভিযোগ, শেখ শাহজাহান ও শিবপ্রসাদ হাজরার বাহিনী এলাকায় সুন্দরী মেয়েদের আলাদা নজরে দেখে। রাতের বেলাতে এসে গ্রামের মেয়েদের বাড়িতে যেতে বলে। আর না গেলে দেওয়া হয় হুমকি। শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের এই দাপুটে নেতাদের বিরুদ্ধে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন