রাজ্যজুড়ে চলা বামপন্থীদের লাগাতার আন্দোলনে জনগণের সাড়া দেখে বিপাকে পড়েছেন মমতা ব্যানার্জী। এখন তা আরও স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। কারণ, পুজো উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে গিয়েও তিনি সিপিআই(এম)-র ৩৪ বছর নিয়ে ভাষণ দিচ্ছেন। হ্যাঁ, ঠিক এইভাবেই তৃণমূল সুপ্রিমোকে ফের এক হাত নিলেন সিপিআই(এম) রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
মহালয়ার আগে থেকেই সারা কলকাতায় একের পর এক পুজো উদ্বোধন করতে শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সব জায়গাতেই তাঁর গলায় শোনা গেছে বিরোধীদের বিরুদ্ধে কটাক্ষের সুর।
এই প্রসঙ্গে সেলিম বলেন, আগে সরকারি অনুষ্ঠানেও মুখ্যমন্ত্রী বস্তাপচা মন্তব্য করেছেন। এখন বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, পুজো উদ্বোধনে গিয়েও এসবই বলছেন। আসলে চাপে পড়লে কারো কারো স্থান-কাল-পাত্র বোধ লোপ পায়, মুখ্যমন্ত্রীরও তাই হয়েছে। বাংলার ছাত্র--যুবরা ধর্মতলার সমাবেশে যে চার্জশিট দিয়েছেন, আগে তার জবাব দিক মুখ্যমন্ত্রী। কেন এখনও ইনসাফ মেলেনি, তার জবাব চাই।
সিপিআই(এম) নেতার কথায়, স্বস্তি পেতে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপোকে পরিবার এবং ঘনিষ্ঠদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে কেন? মমতা ব্যানার্জীকেই বা কেন আরএসএস-র পায়ে পড়তে হচ্ছে? আসলে উনি অস্বস্তিতে আছেন বলেই এমন আচরণ করছেন। লাল আতঙ্ক কী তাড়া করে বেড়াচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে?
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে বালিগঞ্জের এক পুজো উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে বামেদের সম্পর্কে তৃণমূল নেত্রী বলেন, মনে হচ্ছে সিপিআই(এম) যেন ফিরে আসছে। কেউ যেন ওদের ডাকছে! শুধু তাই না, বামেদের বিষোদগার করে তাঁকে বলতে দেখা গেছে, একদিন তো এই বাংলাতেই ভারতের রাজধানী ছিল। ভারতের সবচেয়ে বড় রেল স্টেশন ছিল হাওড়া। বামেদের ৩৪ বছরের শাসনকালে তা নষ্ট হয়ে গেছে।
পাল্টা সেলিম বলেন, এতদিন তো দূরবীন দিয়েও বামপন্থীদের দেখতে পাচ্ছিলেন না বলে বেড়াতেন। এটা বেশ ভালো ব্যাপার যে চোখের ভালো ডাক্তার দেখিয়েছেন। তাই দূরবীন ছেড়ে খালি চোখেই দেখতে পাচ্ছেন। কিন্তু বর্তমানে রাজ্যজুড়ে যে অন্যায়-অত্যাচার-অরাজকতা চলছে, মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে প্রতিবাদীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতি থেকে চুরি, লুট অব্যাহত। ক্রমশ বেকারত্ব বাড়ছে, দারিদ্রতা নিয়ে বিন্দুবিসর্গ উচ্চারণ করছেন না মমতা। বর্তমান সমস্যা ছেড়ে তিনি আস্তাকুঁড় ঘাটছেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন