বৃহস্পতিবার রাতে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থীদের উপর ব্যাপক পুলিশি নির্যাতন এবং অত্যাচারের পর চাকরিপ্রার্থীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। এরই প্রতিবাদে শুক্রবার সারা রাজ্যজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচীর ডাক দেয় বাম ছাত্র-যুব সংগঠন SFI-DYFI পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি। সল্টলেক চত্বর থেকে ইতিমধ্যেই একাধিক জনকে আটক করেছে পুলিশ। এমনটাই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত।
পিপলস রিপোর্টারের প্রতিনিধিকে এসএফআই রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান জানান, "মীনাক্ষী মুখার্জি, ময়ূখ বিশ্বাস, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, কলতান দাশগুপ্ত সহ আমাদের সবাইকে আটক করা হয়েছে। আমরা অনেকেই ছিলাম। কোন থানায় নিয়ে যাচ্ছে তা জানিনা। তবে নিউটাউনের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আপাতত ক্যান্সার হাসপাতালের সামনে আছি।"
মীনাক্ষী সহ বাম ছাত্র যুবদের তরফ থেকে পুলিশের কাছে বারবার দাবি করা হচ্ছিল, ১৪৪ ধারা কতদূর পর্যন্ত জারি করা রয়েছে, তার কাগজ দেখালে তারা তার বাইরে গিয়ে আন্দোলন শুরু করবে। যদিও পুলিশ কোনও কাগজ দেখাতে পারেনি। মানববন্ধন করে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে গিয়েছিল তাঁরা। এরপর বিধাননগর থানার RAF এসে তাঁদের টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে।
শুক্রবার বেলা ১২টায় সল্টলেক করুণাময়ী মোড় থেকে বাম ছাত্র-যুবদের কেন্দ্রীয় মিছিল শুরু হয়। ক্রমশ তা এগিয়ে চলে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের দিকে। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখার্জি সহ অনেকেই। বাম ছাত্র-যুবদের বিক্ষোভের জেরে ফের উত্তপ্ত হয় সল্টলেক সিটি সেন্টার চত্বর। রাস্তায় বসে পড়েন একাধিক কর্মী-সমর্থক। পুলিশ তাঁদের ধরপাকড় শুরু করলে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
করুণাময়ী চত্বর থেকে গ্রেফতার করা হয় সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস, প্রাক্তন ডিওয়াইএফআই নেতা সায়নদীপ মিত্র, মধুজা সেন রায়, সপ্তর্ষি দেব সহ মোট ২০ জনকে।
ঘটনাস্থল থেকেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন ডিওয়াইএফআই নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জী। তিনি বলেন, ১৪৪ ধারা কত দূর পর্যন্ত আছে তা আমরা দেখতে চাই। পুলিশ আমাদের স্পষ্টভাবে তা দেখিয়ে দিক। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করব। চাকরিপ্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপর ১৪৪ ধারা কেন জারি করা হল? পশ্চিমবঙ্গে প্রতিবাদ করা কি অন্যায়? পয়সা দিয়ে, সাদা খাতা জমা দিয়ে যারা চাকরি পেয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে, চলবে।
এই খবর লেখা পর্যন্ত বাম ছাত্র-যুবদের সাথে তুমুল বিক্ষোভ এবং ধস্তাধস্তি চলছে পুলিশের। নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছে সমগ্র পর্ষদ ভবন। মহিলা কর্মী-সমর্থকদের আটক এবং গ্রেফতার করার জন্য নামানো হয়েছে মহিলা পুলিশ। কোনওভাবেই অবস্থান প্রত্যাহার করতে নারাজ SFI-DYFI নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ করছেন তাঁরা। মীনাক্ষী মুখার্জী, কলতান দাশগুপ্ত সহ আরও অনেককেই টেনে-হিঁচড়ে পুলিশ ভ্যানে তোলা হচ্ছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন