মোদী সরকার দেশের সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থাকে হিন্দুত্ববাদী ছাঁচে গড়ে তোলার পরিকল্পনায় মেতেছে। তারই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে জারি করা হচ্ছে ইউজিসি গাইডলাইন। এই অভিযোগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ সহ একাধিক দাবিতে মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সভার ডাক দেয় বামপন্থী ছাত্র-সংগঠন এসএফআই (SFI)। কিন্তু তাদের প্রতিবাদ সভার মাঝেই হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMCP)-র বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, দু'পক্ষের মধ্যে বিক্ষোভের জেরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় এসএফআই এবং টিএমসিপি-র কর্মীদের মধ্যে। কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রামলাইনের উপর শুয়ে এসএফআই কর্মীরা প্রতিবাদ জানায়। বেশ কিচ্ছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায় যান চলাচল।
এসএফআই কর্মীদের দাবি, টিএমসিপি যখন তাদের আক্রমণ করছিল, সেই সময় নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে, ছাত্র-ছাত্রীদের পাল্টা প্রতিরোধে পিছু হটতে বাধ্য হয় TMCP কর্মীরা। বহিরাগতদের আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী মধুরিমা রায় এবং অনুশীলা মুখার্জী। এছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন এসএফআই কলকাতা জেলা সভাপতি দেবাঞ্জন দে সহ আরও অনেকে। জোড়াসাঁকো এবং আমহার্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু তাঁদের সামনেই এসএফআই কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে।
কলেজ পড়ুয়াদের উপর এহেন আক্রমণের তীব্র নিন্দা করে এসএফআই নেতা দেবাঞ্জন দে জানান - ক্যাম্পাসের ভিতর ইউজিসি-র গাইডলাইন নিয়ে প্রতিবাদ সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। সেই সভায় আক্রমণ শানালো টিএমসিপি। বিজেপি এবং আরএসএস-র বিরুদ্ধে কিছু বললেই ওদের গায়ে জ্বালা ধরে। তবে এমন হামলা করে এসএফআই-কে রোখা যাবে না। আমাদের পাল্টা প্রতিরোধে টিএমসিপি-র বহিরাগতরা পালাতে বাধ্য হয়েছে।
টিএমসিপি-র দাবি, ওরা যে ইউজিসি নির্দেশিকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে এসেছে, ওদের জিজ্ঞাসা করুন ওরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশিকা মানছে না কেন? এই নির্দেশিকা অনুযায়ী, বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারে না। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া নন বা প্রাক্তনী। তাঁরা কোন যুক্তিতে ক্যাম্পাসে ঢুকতে যাচ্ছেন?
পাল্টা এসএফআই-র দাবি, আমরা কেউ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, কেউ আবার গবেষক। অর্থাৎ, সকলেই এখানকার পড়ুয়া। ওদের জিজ্ঞাসা করুন কবে পাশ করেছেন? ক্যাম্পাসে থেকে শুধু গুন্ডাগিরি করছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে লুম্পেনমুক্ত করতে হবে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন