লোকসভার পর বিধানসভা উপনির্বাচনেও রাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। রাজ্যের চারটি আসনের মধ্যে যে তিনটি বিজেপির ছিল সেগুলোও হাত ছাড়া হয়েছে। এমত অবস্থায়, ইডি-সিবিআই দিয়ে বিরোধীদের গ্রেফতারের উপর ভরসা না করে, সংগঠন মজবুত করার উপর জোর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
সুকান্তের এই মন্তব্যের পরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। যদিও এই নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দুর দাবি, নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই একথা বলেছেন তিনি।
গত রবিবার হুগলির হিন্দমোটরে সভা করতে গিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। সেখানে গিয়ে তিনি দলীয় কর্মীদের বার্তা দিয়ে বলেন, “দাদা সিবিআইকে বলুন একে অ্যারেস্ট করে নিতে, সঙ্গে সঙ্গে আমরা জিতে যাব, হবে না। ওকে জেলে ঢুকিয়ে দিন দাদা, জিতে যাব, হবে না।“
অনুব্রত মণ্ডলের উদাহরণ টেনে সুকান্ত বলেন, “অনুব্রত মণ্ডল তো জেলে ছিলেন। আছেন তো জেলে? বীরভূম জিতেছি আমরা?” এরপরেই সংগঠনের উপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, “আপনি পরিশ্রম করে যদি সংগঠন তৈরি করতে পারেন, তা হলে জিতবেন। আর যদি পরিশ্রম করে সংগঠন তৈরি করতে না পারেন, যাকে খুশি অ্যারেস্ট করুন, কোনও দিন জিততে পারবেন না।“
এনিয়ে মঙ্গলবার শুভেন্দু অধিকারীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “আমাদের রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের পাল্টা আমি কেন বলব? পার্টিতে স্টেট প্রেসিডেন্ট ফাইনাল।“ তিনি আরও বলেন, “ওঁর যা অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ, উনি তা-ই বলেছেন। উনি মাঠে থাকা লোক। উনি ওঁর কথা বলেছেন। আমিও আমার অভিজ্ঞতা থেকে আমার মতো করে বলি।“
এরপরেই সংবাদ মাধ্যমের একাংশের দিকে অভিযোগ তুলে বলেন, “আপনাদের রসদ-পুরিয়া আমি দেব না। আপনাদের কিছু লোক আছে, যাদের কাজ বিজেপির মধ্যে ঝগড়া লাগানো। কোনও ঝগড়া নেই। ও সব করে লাভ হবে না। বিজেপি ব্যক্তিবাদে বিশ্বাস করে না। আমরা সবাই দিল্লির নির্দেশে কাজ করি।“
উল্লেখ্য, লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতাদের মুখে কেন্দ্রীয় এজেন্সি এবং কেন্দ্রীয় বাহিনীর কথা শোনা গিয়েছিল। ইডি-সিবিআই দিয়ে গ্রেফতার করানোর হুঁশিয়ারি দিতেও দেখা যায়। কিন্তু ভোটে রাজ্যে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে বিজেপি। এমত অবস্থায় সুকান্তের এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধছে।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন