জোর করে, চুলের মুঠি ধরে এসএলএসটি (State Level Selection Test) চাকরি প্রার্থীদের ধরনা মঞ্চ থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠলো পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের এই আকস্মিক আক্রমণে' কার্যত দিশেহারা চাকরি প্রার্থীরা। আন্দোলনকারীদের চ্যাংদোলা করে তুলে লালবাজার সেন্ট্রাল লকআপে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
গত ৭০ দিন ধরে কলকাতার শহীদ মিনার চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ কর্মসূচি চালাচ্ছিলেন এসএসসির শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিভাগে চাকরি প্রার্থীরা। খোলা আকাশের নিচে প্লাস্টিক পেতে আন্দোলন চালাচ্ছিলেন কয়েকশ বেকার যুবক-যুবতী। তাঁদের এই আন্দোলন জেরে সম্প্রতি ১,৬০০ পদে শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও এরপরও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন চাকরি প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি ছিল, কাউন্সিল শুরু হওয়া এবং নিয়োগপত্র হাতে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কিন্তু এদিন আচমকা জোর করে তাঁদের অবস্থান মঞ্চ থেকে ভেঙে দিল পুলিশ।
জানা গেছে, বেশ কিছু শর্তে এই শহীদ মিনার চত্বরে আন্দোলনকারীদের অবস্থান বিক্ষোভের অনুমতি দিয়েছিল আদালত। পুলিশের দাবি, সব শর্ত মানেনি আন্দোলনকারীরা। তাছাড়া বর্ষা শুরু হলে আন্দোলনকারীদের খোলা আকাশের নিচে থাকতে দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ বিকেল ৫ টার মধ্যে আন্দোলনস্থল খালি করার জন্য নোটিশ দেওয়া হয় আন্দোলনকারীদের। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা না শোনায় তাঁদের জোর করে টেনেহিঁচড়ে সরানো হয়। ভিডিওতে দেখা গেছে, কয়েকজন আন্দোলনকারীকে চ্যাংদোলা করে, টানতে টানতে প্রিজন ভ্যানে তুলছে পুলিশ। এঁদের মধ্যে মহিলারাও রয়েছেন।
পুলিশের এই পদক্ষেপে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে অনেক চাকরি প্রার্থীকে। ভ্যানের ভিতর থেকেই সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে এক আন্দোলনকারী বলেন, "যতক্ষণ না কাউন্সেলিং শুরু হচ্ছে আমরা আন্দোলন বন্ধ করবো না। প্রয়োজনে এখান থেকে আমাদের লাশ নিয়ে যাবে। এখন থানায় নিয়ে যাচ্ছে, যাক, থানা থেকে আবার এখানেই ফিরবো।"
আর এক আন্দোলনকারী বলেন, "এতদিন এখানে আন্দোলন করছি। আজকে কী এমন হলো যে এই জায়গা নিরাপদ নয় বলে আমাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? কেনো পুলিশ আমাদের ওপর অত্যাচার করলো?" মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন আন্দোলনকারীরা। তাঁদের প্রশ্ন, তাঁরা পাশ করার পরও এখনও চাকরি পায়নি কেন? নিয়ম মেনেই আন্দোলন করছিলেন তাঁরা, তা সত্বেও তাঁদের আন্দোলনস্থল থেকে এভাবে সরিয়ে দেওয়া হলো কেন?
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন