অঙ্কিতার বেতনের পুরো টাকা সহ তিনদিনের মধ্যে চাকরি দিতে হবে ববিতাকে, নির্দেশ হাইকোর্টের

শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এসএসসি মামলার শুনানি ছিল। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ববিতাকে চাকরির নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ববিতা সরকার এবং অঙ্কিতা অধিকারী
ববিতা সরকার এবং অঙ্কিতা অধিকারী ছবি সৌজন্যে - ফেসবুক
Published on

আগামী তিনদিনের মধ্যে ববিতা সরকারকে শিক্ষকের চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। স্কুল সার্ভিস কমিশনকে এই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর বেতন বাবদ ফেরত দেওয়া সমস্ত টাকাও ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে বিচারপতি জানান, অঙ্কিতার শুন্যপদে চাকরি দিতে হবে ববিতা সরকারকে। আগামী ২৭ জুনের মধ্যে চাকরির সুপারিশ পত্র দিতে হবে কমিশনকে। ২৮ জুনের মধ্যে তা পর্ষদের কাছে পাঠাতে হবে এবং ৩০ জুনের মধ্যে পর্ষদকে চাকরির নিয়োগপত্র দিতে হবে।

এর পাশাপাশি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে অঙ্কিতার জমা দেওয়া ৭ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা ১০ দিনের মধ্যে পাবেন ববিতা। অঙ্কিতা যে স্কুলে চাকরি করতেন সেই স্কুলেই ববিতাকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

এদিন শুনানিতে বিচারপতি জানতে চান ববিতা সরকারকে চাকরি দেওয়া হয়েছে কিনা। জবাবে কমিশনের আইনজীবী জানান, পরবর্তী নিয়োগ প্রক্রিয়ার সময় ববিতাকে নিয়োগের সুপারিশ করা হবে। এরপর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় কড়া ভাষায় বলেন, "নির্লজ্জতার সঙ্গে বেআইনি পদক্ষেপ করে অঙ্কিতাকে নিযুক্ত করা হয়েছিল।"

শুক্রবার পর্ষদপক্ষের আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, বোর্ডের চেয়ারম্যানের বক্তব্য অনুযায়ী অঙ্কিতা অধিকারী কোনও ইন্টারভিউ দেননি। এ প্রসঙ্গে বিচারপতির বক্তব্য, "অঙ্কিতা অধিকারী অত্যন্ত বেআইনি কাজ করেছেন। কোনও টাকার অধিকারী নন তিনি। তাঁর স্কুলে পড়ানোও বেআইনি। অঙ্কিতার পার্সোনালিটি টেস্টের পরীক্ষা হলে দেখা যাবে সেটাও আরেকটা স্ক্যাম।"

উল্লেখ্য, রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছেন। এমন অভিযোগ তুলেছিলেন ববিতা সরকার। ববিতার অভিযোগ ছিল, ২০১৮ সালে পরেশ অধিকারী তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরই তাঁর মেয়ের সরকারি চাকরি হয়েছিল। কোচবিহারের ইন্দিরা বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি।

মেধাতালিকায় ২০ নম্বরে নাম ছিল ববিতার। অঙ্কিতার নাম মেধাতালিকার ১ নম্বরে যুক্ত হওয়ার পর ববিতার নাম ২১-এ চলে যায়। এই ঘটনার পর একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিলেন ববিতা সরকার। সেই মামলার যাবতীয় তথ্য প্রমাণ খতিয়ে দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় মন্ত্রী কন্যাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার এবং বেতন বাবদ প্রাপ্ত সমস্ত টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

ববিতা সরকার এবং অঙ্কিতা অধিকারী
নিঃশব্দে শিক্ষিকা পদে যোগ দিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা

স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন

Related Stories

No stories found.
logo
People's Reporter
www.peoplesreporter.in