গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ পরীক্ষার ‘ওএমআর শিট’ বা উত্তরপত্রে যিনি ‘০’ পেয়েছেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) সার্ভারে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৩। আবার উত্তরপত্রে যাঁর প্রাপ্ত নম্বর ১ বা ২, কমিশনের সার্ভারে তাঁরাও পেয়েছেন ৪৩! এসএসসি'র অবৈধ প্যানেলভুক্ত ১৬৯৮ জন প্রার্থীর সকলেই পেয়েছেন ৪৩। আর, কমিশনের সার্ভারে নম্বর বৃদ্ধির এই কাণ্ড দেখে হতবাক হয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
সূত্রের খবর, ১৬৯৮ জন অবৈধ প্যানেলভুক্ত প্রার্থীর মধ্যে ১৪৭ জন লিখিত পরীক্ষায় ‘০’ নাম্বার পেয়েছেন। কমিশনের সার্ভারে তাঁরা ৪৩ পেয়েছেন। শূন্যের পরেই রয়েছে ১ নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা। সার্ভারে তাঁদেরও নম্বর বেড়ে হয়েছে ৪৩।
জানা যাচ্ছে, এসএসসি গ্রুপ ডি কর্মী নিয়োগ পরীক্ষার মোট নম্বর ছিল ৪৫। সেখানে কোন জাদুবলে ১৬৯৮ জন প্রার্থীই ৪৩ নম্বর পেয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই ৪৩ নম্বর দেওয়া প্রসঙ্গে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘একটু কম নম্বর দেওয়া হয়ে গেল না!’
একইসঙ্গে, গ্রুপ ডি পরীক্ষার সকল উত্তরপত্র মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের কাছেও পৌঁছে দেওয়ার জন্য সিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। জানা যাচ্ছে, মঙ্গলবার, আদালতের সেই নির্দেশ কার্যকর করেছে সিবিআই।
এ প্রসঙ্গে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, ‘প্যানেলভুক্ত, ওয়েটিং লিস্টে থাকা এবং কোনও তালিকাতেই ঠাঁই না-পাওয়া প্রার্থী মিলিয়ে মোট ২৮০০ উত্তরপত্রের প্রতিলিপি দিয়েছে সিবিআই। এ বার সব মিলিয়ে দেখতে হবে, কোথায় কী হয়েছে। সে সব দেখে তার পরে হাই কোর্টে জানাব।’
গত ২৯ ডিসেম্বর, ওই ১৬৯৮ প্রার্থীর মধ্যে ১৬৯৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে বলে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। সেই মামলায় বিচারপতি বসুর পর্যবেক্ষণ ছিল, অবৈধ ভাবে নিযুক্ত কর্মীদের কোনও ভাবেই আর স্কুলে ঢুকতে দেওয়া চলবে না।
আদালত সূত্রে খবর, গ্রুপ ডি পদে মোট ৪,৪৮৭ জনের চাকরি হয়েছিল। তার মধ্যে ৩,৮৮০ জন চাকরি পেয়েছেন প্যানেলের মেয়াদ থাকাকালীন। বাকি ৬০৭ জনের চাকরি হয়েছে মেয়াদ শেষে।
নিযুক্তদের মধ্যে ২,৮২৩ জনের চাকরি হার্ড ডিস্ক ও সার্ভারে কারচুপি করে হয়েছে বলে উঠে এসেছে সিবিআই তদন্তে। এর মধ্যে তালিকাভুক্ত ১৬৯৮ জন পেয়েছে ৪৩ নম্বর!
স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে বাঁচিয়ে রাখতে পিপলস রিপোর্টারের পাশে দাঁড়ান। পিপলস রিপোর্টার সাবস্ক্রাইব করতে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন